Barak Valley

উৎসবের আমেজ উল্টোরথেও করিমগঞ্জে উপচে পড়ল ভিড়

করিমগঞ্জ : প্রতিবছর করিমগঞ্জে উল্টো রথযাত্রা নিয়ে সকল মন্দির প্রতিষ্ঠান একমত হয় না৷ ফলে প্রতিবছর করিমগঞ্জে দুইদিন উল্টো রথযাত্রা হয়ে থাকে৷ এবারও খানিকটা এমনটাই হয়েছে৷ কিছু মন্দির থেকে সোমবার রথ বের করা হয়েছে৷ আবার কিছু মন্দির না কি মঙ্গলবার উল্টো রথযাত্রা পালন করবে৷ প্রভু জগন্নাথের উল্টো রথের রশিতে টান দিতে উপচে পড়ে ভিড়৷ গত সাতদিন আগে রথে চড়ে মাসির বাড়ি যান প্রভু জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা৷ এই ক’টা দিন মাসির বাড়ি কাটিয়ে আজ রথে চড়ে ফিরলেন বাড়িতে৷ তাঁদের সেই রথ চড়ার স্বর্গীয় দৃশ্য দেখতে ভিড় করেন জগন্নাথ দেবের ভক্তরা৷ প্রচন্ড গরমে ৩৫° তাপমাত্রার উল্টো রথযাত্রায় অনেকটাই ভিড় কম হয়েছে৷ প্রথম দিকে খুব কমই ছিল, তবে শেষদিকে বেশ ভিড় পরিলক্ষিত হয়৷

করিমগঞ্জে প্রতিবছর ধুমধামে রথযাত্রা পালন করা হয়৷ মদনমোহন, টাউন কালীবাড়ি, গাছ কালীবাড়ি, ইসকন মন্দির, নিম্বার্ক আশ্রম, শিববাড়ি রোডের ভুবনেশ্বর সাধুঠাকুরের মন্দিরের রথ৷ মেইন রোডের অগ্নিনির্বাপক বাহিনীর কার্যালয়ের পাশে থাকা শিবমন্দির, বনমালির মহাপ্রভু আশ্রম এবং এবার প্রথমবার রথ বের করেছে রাধারমণ আশ্রম৷ এছাড়া কিছু কিছু নিজস্ব বাড়ির রথ বের করা হয়েছে৷ সব মিলিয়ে প্রথম রথে শহর অঞ্চলে প্রায় ১০টি রথ শহর পরিক্রমা করে৷ কিন্তু উল্টো সংখ্যাটা কিছু কম হয়েছে৷ কাঁঠফাটা রোদ, প্রচন্ড গরম হলেও করিমগঞ্জে ভক্তদের আনন্দে, উল্লাসে ও উন্মাদনায় কোনো খামতি ছিল না৷ এদিন আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা সকলেই রথের রশিতে টান দিতে নেমে পড়েন রাস্তায়৷ রথের রশিতে টান দেওয়া পুণ্যের কাজ বলে ভক্তদের বিশ্বাস, তাই এই পবিত্র কাজ থেকে কেউ নিজেকে দূরে রাখতে চান না৷ যারা প্রথম রথের রশিতে টান দিয়েছেন তারা অবশ্যই উল্টো রথের রশিতে টান দিতে উপস্থিত হন৷ এছাড়া যারা প্রথম দিন পারেন নি তারাও উল্টো রথে এসেছেন, রথের রশিতে একবার টান দিতে এগিয়ে যান৷

এদিন ঢাক, ঢোল, কাশি-করতাল বাজিয়ে নাম সংকীর্তনের মাধ্যমে করিমগঞ্জের মদনমোহন আখড়ায় রথযাত্রা শুরু হয়৷ মদনমোহন আখড়ায় প্রধান পুরোহিত প্রভুকে কোলে নিয়ে রথে উঠেন৷ বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে নাম সংকীর্তনের মাধ্যমে অগণিত ভক্তরা রথের রশি টেনে করিমগঞ্জ শহর জুড়ে পরিক্রমা করা হয়৷ তবে উল্টোরথের জন্য পূর্ববাজার হয়ে চরবাজার, বিপিনপাল রোড, স্টেশন রোড, মেইন রোড হয়ে শম্ভুসাগর রবীন্দ্র মূর্তির সামনে গিয়ে ফিরে আসে৷

এদিকে, টাউন কালীবাড়ি রথের রশি টেনে নিয়ে বিসর্জন ঘাট পর্যন্ত যাওয়ার পর রথ থেমে যায়৷ রথের চাকা নষ্ট হয়ে যায়৷ দীর্ঘ সময় সেখানে থাকার পর সন্ধ্যা নাগাদ চাকা মেরামত করে নিয়ম মেনে রথ নিয়ে ফিরে আসেন৷

এদিকে, প্রভুর ভক্তরা জগন্নাথের উদ্দেশ্যে কলা, আম, নারকেল সহ বিভিন্ন ফল দিয়ে থাকেন৷ আবার সেই ফল প্রসাদ হিসাবে রথের উপর থেকে লুট দেওয়া হয়৷ সেই লুটের প্রসাদ সংগ্রহ করতে ভক্তদের মধ্যে প্রচন্ড উৎসাহ দেখা দেয়৷ রথযাত্রা উপলক্ষে কচিকাঁচারা মাটির পুতুল কিনে নিয়ে যায়৷ আবার কেই বাঁশি কিনে৷

এদিকে, রথযাত্রার প্রধান খাবার জিলেপি কিনতে ভিড় দেখা যায়৷ সব মিলিয়ে গরমের মধ্যে রথযাত্রার আনন্দ করিমগঞ্জবাসী উপভোগ করেন৷

Show More

Related Articles

Back to top button