করিমগঞ্জে শুরু ৯০ দিনের শিশু সুরক্ষা সংক্রান্ত সচেতনতা অভিযান
করিমগঞ্জ : করিমগঞ্জে ‘সুরক্ষিত শৈশব সোনালী অসম’ শীর্ষক শিশু সুরক্ষার বিষয়ে ৯০ দিনের সচেতনতা অভিযানের সূচনা করা হয়েছে৷ করিমগঞ্জের জেলা শিশু সুরক্ষা ইউনিটের উদ্যোগে ও করিমগঞ্জ জেলা প্রশাসন এবং রাজ্য শিশু সুরক্ষা সোসাইটির সহযোগিতায় আজ সোমবার সকাল দশটায় করিমগঞ্জ শহরে অবস্থিত রবীন্দ্র সদন মহিলা মহাবিদ্যালয়ের প্রেক্ষাগৃহে এই অভিযানের সূচনা করা হয়। অনুষ্ঠানের সভাপতি ও মুখ্য অতিথি জেলাশাসক মৃদুল যাদব এবং অন্যরা প্রদীপ প্রজ্বলন করে এই অভিযানের সূচনা করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে অতিথিদের উত্তরীয় পরিয়ে বরণ করা হয়। তার পর সহকারী আয়ুক্ত ও ভারপ্রাপ্ত জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক প্রিয়াঙ্কা ইয়ামনাম শিশু সুরক্ষায় ৯০ দিনের সচেতনতা অভিযান সম্পর্কে উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে বক্তব্য পেশ করেন। তিনি জানান, শিশু পাচার, বাল্যবিবাহ, শিশুশ্রম, শিশু হেনস্তা, শিশুদের অন্যান্য সমস্যাবলির বিরুদ্ধে গণ-সচেতনতা গড়ে তুলতে এই অভিযান চালানো হচ্ছে।
জেলাশাসক তাঁর বক্তব্যে জেলার জনগণকে শিশু সুরক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সচেতন হতে এবং শিশুদের প্রতি যত্নশীল হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, জেলায় এই ৯০ দিন বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম যেমন ক্যুইজ, অঙ্কন প্রতিযোগিতা ইত্যাদির মাধ্যমেও শিশু সুরক্ষার সচেতনতা গড়ে তোলা হবে। অনুষ্ঠানে এডিসি মিনার্ভা দেবী জেলায় বাল্যবিবাহমুক্ত একটি গ্রাম শনাক্ত করে সে অনুযায়ী গড়ে তুলতে পরামর্শ দেন। পাশাপাশি জেলা শিশু সুরক্ষা ইউনিট থেকে একটি বিকল্প যোগাযোগের নম্বরও জারি করতে পরামর্শ দেন তিনি।
সম্মানিত অতিথি হিসেবে রবীন্দ্র সদন মহিলা মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ অশোককুমার দাস শিশু সুরক্ষায় সচেতনতার পাশাপাশি শিশুদের সুশিক্ষা দান করতে আহ্বান জানান। শ্রম পরিদর্শক বিক্রম দাস শিশুশ্রমের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করে এর বিরুদ্ধে বিদ্যমান আইনের বিভিন্ন ধারাগুলি তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে জুভিনাইল জাস্টিস বোর্ডের সদস্য মহাশ্বেতা চক্রবর্তী তাঁর বক্তব্যে মা-বাবাকে শিশুদের জন্য সময় দিতে পরামর্শ দেন। পাশাপাশি তিনি শিশুদের আবেগ এবং মনের ভাব বোঝার জন্য তাদের কথা শুনতে পরামর্শ দেন। সিডব্লিউসি সদস্য ঝুমা দাস শিশু সুরক্ষায় গণসচেতনতা গড়ে তুলতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
এদিকে এদিনের অনুষ্ঠানে সিডব্লিউসি-র রিসোর্স পার্সন সত্যজিত্ দাস শিশু পাচার, বাল্যবিবাহ, শিশুশ্রম, শিশু হেনস্তা ইত্যাদির বিরুদ্ধে বিদ্যমান বিভিন্ন আইন ও ধারা, শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে বিদ্যমান কঠোর পোকসো আইন ইত্যাদি নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা করেন। অনুষ্ঠানে ডিএসপি গীতার্থ দেবশর্মা সহ পঞ্চায়েত প্রতিনিধি, দীনেশচন্দ্র দেব স্মৃতি হোমের আবাসিকরা, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও সামাজিক সংস্থার কর্মকর্তা, মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রী, জেলা শিশু সুরক্ষা ইউনিটের পক্ষে দেবযানী দাস ও কার্যালয়ের অন্যান্য কর্মীরা অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানের শেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ভারপ্রাপ্ত জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক প্রিয়াঙ্কা ইয়ামনাম।