ডিলিমিটেশনের বিরুদ্ধে পাথারকান্দির জনগণকে রাস্তায় নামার আহ্বান বামেদের

পাথারকান্দি : ‘অগণতান্ত্রিক ডিলিমিটেশন’-এর খসড়া প্ৰস্তাবের বিরুদ্ধে রাজ্যব্যাপী আন্দোলনে নেমেছে বিরোধী দলগুলি। এ সম্পর্কে মানুষের মতামত জানতে বরাক উপত্যকার তিন জেলা সফর করে গেছেন বেশ কয়েকজন শীর্ষ আধিকারিক।
ডিলিমিটেশন-এর খসড়া প্ৰস্তাবের বিরুদ্ধে অন্য বিরোধী দলের সঙ্গে সিপিআইএমও গর্জে উঠেছে। সিপিআইএম-এর করিমগঞ্জ জেলার নেতারা রাস্তায় নেমে ডিলিমিটেশনের বিরুদ্ধে হুংকার দিয়েছেন। বিগত সম্প্রতি বদরপুরে মিছিল করে ডিলিমিটেশনের প্রতিবাদ জানিয়েছে সিপিআইএম। পাশাপাশি নয় দফা দাবি নিয়ে দলের প্রতিবাদ কর্মসূচি চালিয়ে যাছে বাম দলটি। ২৬ জুন ছিল দলের কেন্দ্রীয় সমাবেশ।
সেই বিক্ষোভ সভায় করিমগঞ্জ জেলার পাথারকান্দি, করিমগঞ্জ, বদরপুর, রাতাবাড়িতে নাগরিক সভা অনুষ্ঠিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই সিদ্ধান্ত মতে সাত জুলাই পাথারকান্দির রবীন্দ্রভবনে প্রবীণ সিপিআইএম নেতা কৃপেশ দাশগুপ্তের পৌরোহিত্যে এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার শুরুতে বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে দলের জেলা সম্পাদক পরিতোষ দাশগুপ্ত বলেন, রাজ্যে ডিলিমিটেশনের প্রস্তাব পেশ করেছে নির্বাচন কমিশন। এতে বিজেপি ছাড়া অন্যন সব দলের নেতা-কর্মী সহ রাজ্যের সব ধর্মীয়, ভাষাভাষী মানুষ বেজায় ক্ষুব্ধ। ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশস্বরূপ ২৭ জুন ডিলিমিটেশনের বিরুদ্ধে আহূত বনধ-এর দিন পাথারকান্দি শহরে গণ্ডগোল পাঁকিয়েছিল একটি চক্র।
তিনি বলেন, প্রকাশিত খসড়ায় জনগণের ভালো দেখতে পছন্দ করে না সরকার। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডিলিমিটেশনে খুশি, বরাকের বিজেপি নেতারাও বলতে গেলে খুশি। এই ঘটনাগুলো থেকে বোঝা যায়, বিজেপি বরাকের মানুষের স্বার্থের পক্ষে কি না? পরিতোষ বলেন, অসমের এজিপি-বিজেপি জোট সরকারের দর্শন একদিকে উগ্র-হিন্দুত্ব, অন্যদিকে উগ্রজাতীয়তাবাদ। এই দর্শন প্রতিফলিত হয়েছে ডিলিমিটেশন প্রক্রিয়ার খসড়ায়। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে পরিতোষ বরাক-ব্রহ্মপুত্রের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষকে যৌথভাবে ডিলিমিটেশনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামার আহ্বান জানান।
সভার অন্য বক্তা জেলা সম্পাদকমণ্ডলির সদস্য ব্যোমকেশ ভট্টাচার্য বলেন, বরাকে বার বার ভাষা আইন লঙ্ঘিত হচ্ছে। উন্নয়ন ও নিয়োগের ক্ষেত্রে যে বঞ্চনা চলছে ডিলিমিটেশন তার চেয়ে আলাদা কিছু নয়।
প্রধান বক্তা সিপিআইএম-এর অসম রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলির সদস্য নির্মল দে বলেন, দেশের মানুষের সমস্যা ও রাজ্যের মানুষের সমস্যাকে প্রাধান্য না দিয়ে সরকারের প্রচ্ছন্ন মদতে ডিলিমিটেশনের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে।
দীর্ঘ বক্তব্য পেশ করে তিনি বলেন, শুধু পাথারকান্দির লোকদের ভাবলে চলবে না। সমস্ত জেলা সহ বরাক উপত্যকার জনগণকে করিমগঞ্জ জেলার দুটি বিধানসভা কেন্দ্র বিলুপ্তির বিরুদ্ধে বর্জকণ্ঠে আওয়াজ তুলতে হবে। সভা শেষে সভার সভাপতি কৃপেশ দাশগুপ্ত তাঁর সারগর্ভ বক্তব্যে সমস্ত রকম বিভেদকামী শক্তিকে পরাস্ত করে ডিলিমিটেশনের বিরুদ্ধে সবাইকে একজোট হয়ে আন্দোলনে নামার আহ্বান জানান।