বাংলা পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ইংরেজিতে ‘আজব কাণ্ড’ শিলচরের ডনবস্কো স্কুলের
বাংলা বিষয়ের প্রশ্ন বিকৃত করে ইংরেজিতে! বিতর্ক চরমে, প্রতিবাদে সোচ্চার ভাষাপ্রেমী মানুষ; বিভাগীয় শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি
শিলচর ব্যুরো : বাংলা পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ইংরেজি ভাষায় ছাপিয়ে ‘আজব কাণ্ড’ ঘটাল শিলচর ডনবস্কো স্কুল৷ ফলে বৃহস্পতিবার পরীক্ষা শুরুর পরই দেখা দেয় তুমুল বিতর্ক৷ শিলচরের একাধিক ছাত্র সংগঠন ডনবস্কো স্কুলের এই ঘটনাকে আজব আখ্যায়িত করে ভুল সংশোধন করার পরামর্শ দিয়েছে৷ শুধু তাই নয়, এই ঘটনাকে মাতৃভাষার ওপর আগ্রাসন হিসেবে দেখছেন অনেকেই৷ ফলে সামাজিক মাধ্যমে ডনবস্কো স্কুলের সমালোচনায় সরব হতে দেখা গেছে শিলচরের অনেকেই৷ বলতে গেলে ডনবস্কো স্কুলের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায় বৃহস্পতিবার৷
‘একাদশ ভাষা শহিদের শহরে এই ঘটনা বড়ই বেদনাদায়ক’
এদিন ৩য় শ্রেণির বাংলা বিষয়ের ১ম unit test ছিল৷ প্রশ্নপত্রে দেখা যায়, বাংলা পরীক্ষা হলেও প্রশ্ন ছিল ইংরেজি হরফ ও ইংরেজি ভাষায়৷ এমন প্রশ্নপত্র দিয়ে পড়ুয়াদেরও বিপাকে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে৷ বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গৌতম প্রসাদ দত্ত ক্ষোভ ব্যক্ত করে বলেন, গোটা ঘটনা অনাকাঙ্খিত৷ একাদশ ভাষা শহিদের শহরে এই ঘটনা বড়ই বেদনাদায়ক৷ এমন ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে গৌতম প্রসাদ দত্ত বলেন, এর যাতে পুনরাবৃত্তি না হয়, তার জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে স্কুল কর্তৃপক্ষকে৷
একাধিক সংগঠনের কর্মকর্তাদের অভিযোগ, প্রথমে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ে মাতৃভাষার বদলে ইংরেজিতে পড়তে বাধ্য করা হয়৷ বিভিন্ন দল সংগঠন এর প্রতিবাদ করছে৷ এবার বেসরকারি স্কুল গুলোর মাধ্যমে বাংলা ভাষার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হল বলে মন্তব্য অনেকেরই৷
অপরদিকে, বরাক উপত্যকা মাতৃভাষা সুরক্ষা সমিতি কাছাড় জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ চক্রবর্তী বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এই ঘটনাকে অদ্ভুত ও কাণ্ডজ্ঞানহীন আখ্যায়িত করেছেন৷ এমনকি এই অবাঞ্ছিত ক্রটির জন্য বিভাগীয় শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে স্কুল কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দিয়েছে সমিতি৷ ছাত্র সংগঠন AIDSO ঘটনা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ক্রটি সংশোধনের পরামর্শ দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষকে৷
এদিকে, এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানতে ডনবস্কো স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মচারীরা বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি৷ তবে জানা গেছে, স্কুলের উচ্চপদস্থ পরিচালক শহরের বাইরে রয়েছেন৷ শুক্রবার স্কুলের তরফে স্পষ্টীকরণ দেওয়া হতে পারে৷