সংস্কারহীন করিমগঞ্জ শ্মশানঘাট সাজিয়ে তুলতে ময়দানে পৌরসভা

৩৫ লক্ষ টাকার প্রজেক্ট প্রেরণ করা হয়েছে দিসপুরে
করিমগঞ্জ : গুয়াহাটির ভূতনাথ, হোজাইর শান্তিবন সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের শ্মশানঘাট পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে অনেক বছর আগেই৷ শ্মাশানঘাটকে সাজিয়ে তুলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তারা সবার জন্য তা উন্মুক্ত করে দিয়েছেন৷ যেখানে অবসর সময় কাটান বৃদ্ধরা, বিনোদনে মেতে ওঠেন শিশুরা৷ কিন্তু বরাক উপত্যকার প্রান্তিক জেলা করিমগঞ্জের এই শ্মশান ঘাট দেখলে চোখ কপালে উঠবে সকলের৷ দীর্ঘ বছর ধরে সংস্কারহীন শ্মশান এবার সাজিয়ে তুলতে উদ্যোগ নিয়েছে পৌরসভা৷ ৩৫ লক্ষ টাকার প্রজেক্ট দিসপুরে প্রেরণ করা হয়েছে৷ অর্থের অনুমোদন এলে কাজ শুরু হবে বলে জানান উপ-পৌরপতি সুখেন্দু দাস৷ বলেন, আগামী সপ্তাহে তিনি দিসপুর ছুটে গিয়ে তিনি বিস্তারিত খোঁজ নেবেন৷
শহরের একমাত্র সরকারি শ্মশান ব্রজেন্দ্র রোডের শ্মশান ঘাট বাস্তবে বেহাল৷ শ্মশানে মৃতদেহ সৎকার করতে এসে শব নিয়ে দুর্ভোগে পড়তে হয় জনগণকে৷ শ্মশানের চুল্লিগুলি যেমন বেহাল অবস্থায় রয়েছে তেমনি শবদেহের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করতে এসে চরম হেনস্তার সম্মুখীন হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে৷ শ্মশানে যেমন নেই পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা, তেমনি নেই জলের সুব্যবস্থা৷ শ্মশান ঘাটে থাকা পুকুরটি সংস্কারের অভাবে ধুঁকছে৷ এর জল তো ব্যবহারেরও অযোগ্য৷ কেয়ারটেকার না থাকায় রাতে ওই শ্মশানে চলে মদ্যপদের দাপট৷
জ্বলে যাওয়া কাঠের টুকরো সরিয়ে নেওয়ার জন্য সামান্য একটি কোঁদাল পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায় না৷ শবদাহ করতে আসা লোকজনদের জন্য বসার ব্যবস্থা থাকলেও সংস্কারের অভাবে একেবারেই বেহাল অবস্থায় পরে রয়েছে স্থায়ী বেঞ্চগুলো৷ শবদাহের পর জ্বলন্ত কাঠের টুকরো যথাস্থানে পরে থাকায় একেবারেই নোংরা পরিবেশ শ্মশান চত্বরে৷ নালাগুলোতে নোংরা জল জমে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি হলেও নূন্যতম কথা বলার লোক পাওয়া যায় না৷
এছাড়াও শ্মশানের নোংরা পরিবেশের কারণে আশপাশের শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, মন্দির ও সাধারণ মানুষ প্রভাবিত হচ্ছেন৷
সরকারি অর্থ ব্যায়ে, ব্যাপক প্রচারে বরাকের প্রথম ইলেকট্রিক চুল্লি (পড়ুন বর্তমানে বিকল) বসানো সহ ঘর তৈরিতে (পড়ুন বর্তমানে পরিত্যক্ত) কয়েক লক্ষাধিক টাকা খরচ হলেও যত্ন নেওয়ার যেন খেয়াল নেই৷ নষ্ট ইলেকট্রিক চুল্লি সারানোর জন্য সুদুর বিহার থেকে কর্মী এলে বর্তমানে যেই কে সেই৷ বর্তমানে বন্ধ ঘরে এটি শহরের শোভাবর্ধন করছে!
তবে নিরাশার মধ্যে আশার বাণী শোনালেন উপ-পৌরপতি সুখেন্দু দাস৷ শ্মশানকে সাজাতে ৩৫ লক্ষ টাকার প্রজেক্ট হাতে নেওয়া হয়েছে৷ প্ল্যান এস্টিমেট তৈরী করে দিসপুরে নগর উন্নয়ন কার্যালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে৷ শীঘ্রই কাজ শুরু করা হবে বলে জানান, উপ-পৌরপতি সুখেন্দু দাস৷ বলেন, অর্থ মঞ্জুরের বিষয়টি নিয়ে বিভাগীয় কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে আগামী সপ্তাহে তিনি দিসপুর যাচ্ছেন এবং সেখানে তিনি বিস্তারিত আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ গৃহীত হবে৷