Barak Valley

করিমগঞ্জের শিক্ষক দিবস উদযাপিত, জেলা স্তরে ২৯ জন এবং রাজ্য স্তরে ৯ জন পুরস্কার প্রাপ্ত শিক্ষককে সংবর্ধনা

জনসংযোগ, করিমগঞ্জ, ৫ সেপ্টেম্বর : ৫ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার বেলা ১১ টায় করিমগঞ্জের জেলা শিক্ষক দিবস উদযাপন সমিতির উদ্যোগে শহরের বিপিনচন্দ্র পাল স্মৃতিভবনে জেলা শিক্ষক দিবস উদযাপন করা হয়েছে। ড. সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ ও শিক্ষক সমাজের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের উদ্দেশ্যে ওইদিন করিমগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা আয়ুক্ত মিনার্ভা দেবী আরামবামের পৌরোহিত্যে শিক্ষক দিবসের এই অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

এতে প্রথমে সভাপতি, মুখ্য অতিথি, সম্মানিত অতিথি ও নির্ধারিত বক্তাদের বরণ করা হয়। তারপর প্রদীপ প্রজ্বলন ও ড. সর্বপল্লী রাধা কৃষ্ণণনের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ এবং নগেন্দ্রনাথ তিলকচান্দ মধ্য বঙ্গ বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্বোধনী সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়।

অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ ও সভার উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করেন করিমগঞ্জের বিদ্যালয় সমূহের পরিদর্শক এবং জেলা শিক্ষক দিবস উদযাপন সমিতির সম্পাদক অনুপ কুমার দাস। এতে নির্ধারিত বক্তার ভাষণে করিমগঞ্জ প্রেস ক্লাবের প্রাক্তন সভাপতি সতু রায় রাধা কৃষ্ণনের জীবন আদর্শ নিয়ে বক্তব্য রাখেন। তিনি রাধাকৃষ্ণণকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতাদর্শের সাথে সামঞ্জস্য রেখে সমাজে শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করে যাওয়ার বিষয়ে বর্ণনা করেন।

পাশাপাশি, তিনি দৃঢ় ইচ্ছা শক্তির ফলে যেকোন দুর্গম বস্তুকে জয় করা যায় বলে বর্ণনা করতে গিয়ে রাজ্য সরকারের গ্রহণ করা প্রকল্প ”আরোহন” নিয়ে দৃষ্টিপাত করেন। এতে নির্ধারিত অপর বক্তা আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও গবেষক নিরঞ্জন রায় শিক্ষাব্যবস্থায় নতুন শিক্ষানীতির ভূমিকা এবং এর সাথে গুরুকুল শিক্ষা ব্যবস্থায় যে ১৮ টি বিষয় নিয়ে একসাথে শিক্ষাদান করা হতো তার সামঞ্জস্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন নতুন শিক্ষা ব্যবস্থায় ভারতবর্ষে একঘেয়েমি শিক্ষা থেকে সরে ছাত্রদের রুচি সমৃদ্ধ প্রতিটি বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার গুনগতমান আরও উন্নত হবে। তিনি জানান ২০৫০ সালে মধ্যে দেশ দ্বিতীয় বৃহত্তম শক্তিতে পরিণত হবে। অনুষ্ঠানে নির্ধারিত অন্য বক্তা সমাজসেবী অমরেশ রায় সমাজ গঠনে শিক্ষকদের ভূমিকা অপরিসীম বলে জানান। এতে উত্তর করিমগঞ্জের বিধায়ক কমলক্ষ দে পুরকায়স্থ শিক্ষকদের সমাজ গঠনে ভূমিকা সর্বোপরি বলে বর্ণনা করেন। তিনি শিক্ষকদের সুস্বাস্থ্য ও সুন্দর জীবন কামনা করেন।

অনুষ্ঠানে অতিথিদের আসনে আসাম রাজ্যিক পরিবহন নিগমের অধ্যক্ষ মিশন রঞ্জন দাস, সহকারি আয়ুক্ত প্রিয়াঙ্কা ইয়ুমনাম, বিদ্যালয় সমূহের উপ পরিদর্শ ইকবাল হোসেন বড়ভূইয়া সহ বিভিন্ন বিদ্যালয় থেকে আসা শিক্ষক শিক্ষিকা, ছাত্র-ছাত্রীরা উপস্থিত ছিলেন। এদিনের অনুষ্ঠানে জেলার ৯ জন শিক্ষক যারা রাজ্য স্তরে পুরস্কার পেয়েছেন তাদেরকে মুখ্যমন্ত্রীর স্বাক্ষরিত কৃতজ্ঞতা পত্র দিয়ে সম্মান জানানো হয়। সম্মান প্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন- অপূর্ব দত্ত, সরদিন্দু নাথ, বিকাশ রঞ্জন কালোয়ার, কান্তা দাস, আব্দুল বাসিত, অসীম বিশ্বাস, সুদর্শন সেন, গোলাম ইয়াহাইয়া ও মহিতোষ পুরকায়স্থ। পাশাপাশি শিক্ষক দিবসের এই অনুষ্ঠানে ওইদিন কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত ২৯ জন শিক্ষককে জেলা শিক্ষক দিবস সমিতির পক্ষ থেকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন- অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুল সালাম, সালেহা বেগম, সুভাষ চন্দ্র ঘোষ, রাজলক্ষ্মী দত্ত, ফয়জুর রহমান, দীপ্তি রানী গোপ, মলয় চৌধুরী জয়ন্ত চৌধুরী, সুবীর বরণ রায়, গৌরী দাস, সুদর্শন দেব, নীরেশ রুদ্রপাল, স্মৃতি কণা দাস, রথীন্দ্র কুমার আচার্যী, চন্দ্রশেখর সিনহা, আতিকুর রহমান চৌধুরী ও নির্মল নমঃশূদ্র।

পাশাপাশি, কর্মরত সংবর্ধিত শিক্ষকরা হচ্ছেন- জিবেতেস দেব, চাহুল আহমেদ চৌধুরী, ফখরুল ইসলাম চৌধুরী, ননী গোপাল ভট্টাচার্যী, নরেন্দ্র চন্দ্র দাস, গৌরীশ ভট্টাচার্যী, ধনঞ্জয় নাথ, নমিতা দেব, চয়ন বণিক, আব্দুল খালিক, নজমুল ইসলাম ও রঞ্জন কুমার ভট্টাচার্য। এদের সবাইকে উত্তরীয় মানপত্র ও ফুলের তোড়া দিয়ে সংবর্ধনা জানানো হয়েছে। এদিন অনুষ্ঠান শেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন স্কুল সমূহের উপপরিদর্শক ইকবাল হুসেন বড়ভূইয়া এবং বিরজা সুন্দরী উচ্চ ইংরেজি বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা সমাপ্তি সঙ্গীত পরিবেশন করে।

Show More

Related Articles

Back to top button