করিমগঞ্জের হরিবাসরে গাড়ির ধাক্কায় হত এক, প্রতিবাদে দফায় দফায় সড়ক অবরোধ
পাথারকান্দি : করিমগঞ্জ জেলার অন্তর্গত হরিবাসর এলাকায় ৮ নম্বর জাতীয় সড়কে দুরন্ত একটি চার চাকার গাড়ির ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে বছর ৩৫-এর জনৈক ময়না কন্দের। ময়না পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রি। ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে শুক্রবার রাত প্রায় সাড়ে ১১টা নাগাদ।
ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, স্থানীয় এলাকার বাসিন্দা মিত্রমোহন কন্দের ছেলে ময়না প্ৰতিদিনের মতো গতকাল রাতেও নিজের কর্মক্ষেত্র থেকে জাতীয় সড়কের পাশ ধরে বাড়ি ফিরছিলেন। রাত তখন প্রায় সাড়ে ১১টা। আচমকা লোয়াইরপোয়া থেকে পাথারকান্দি অভিমুখী দ্রুতগামী একটি ছোট গাড়ি এসে তাঁকে ধাক্কা দেয়। সড়কের পাশে ছিটকে পড়ে ছটফট করতে করতে প্রাণ হারান তিনি।
বিকট শব্দ শুনে অকুস্থলে ছুটে যান স্থানীয়রা্য দেখেন, রাস্তার এক পাশে পড়ে রয়েছে সর্বজন পরিচিত কাঠমিস্ত্রি ময়নার নিথর দেহ। দুর্ঘটনার পর ঘাতক গাড়িটি পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। স্থানীয় জনতা ঘাতক গাড়িকে ধরা এবং জাতীয় সড়কে দুরন্ত গাড়িঘোড়ার লাগাম ধরার দাবিতে অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে শুরু করেন।
এদিকে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে আসেন স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার সুনীল কন্দ, বিজেপি কার্যকর্তা শম্ভুলাল নাগ, বৈঠাখাল চা বাগানের অ্যাকাউন্ট্যান্ট গৌতম পাল সহ বহুজন। তাঁরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। ইত্যবসরে খবর দেওয়া হয় পাথারকান্দি থানায়।
খবর পেয়ে পাথারকান্দি থানা থেকে পুলিশের এক দল অকুস্থলে পৌছে উত্তেজিত জনতাকে বুজিয়ে-সুজিয়ে মৃতের পরিবারকে সুবিচার পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। প্রতিশ্রুতি পেয়ে জাতীয় সড়ক অবরোধমুক্ত করেন জনতা।
কিন্তু এর কিছুক্ষণ পর ফের তাঁরা জাতীয় সড়কে অবরোধ গড়ে তুলেন। দাবি প্রশাসনিক ম্যাজিস্ট্রেট তথা রেভিনিউ সার্কল অফিসারকে ঘটনাস্থলে আসতে হবে। থানার অফিসার ইনচার্জ ইনসপেক্টর দীপক দাস আপ্রাণ চেষ্টা করেও বিক্ষোভকারীদের ক্ষান্ত করতে পারেননি। পরে ফোন করে ঘটনাটি জানানো হয় গুয়াহাটিতে অবস্থানরত বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু পালকে। তিনি বিক্ষোভকারী উত্তেজিত জনতার সঙ্গে কথা বলেন। এতে অবশ্য কাজ হয়। প্রত্যাহার করে নেওয়া হয় সড়ক অবরোধ।
পরে নিহতের মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয় জেলা সদরে করিমগঞ্জ সিভিল হাসপাতালে। আজ শনিবার ময়না তদন্ত শেষে মৃতদেহ পরিবারবর্গের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, নিহত ময়না কন্দের মা ও এক বোন রয়েছেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তির দুর্ঘটনাজনিত কারণে অকালমৃত্যুর ঘটনায় গোটা পরিবার অসহায় হয়ে গেছে। অসহায় পরিবারকে সরকারি সাহায্য পাইয়ে দিতে স্থানীয়রা জেলাশাসক, বিধায়ক এবং সার্কল অফিসারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।