Barak Valley

করিমগঞ্জে বিজেপির মৌন মিছিল

করিমগঞ্জ : বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে বড় অঘটন হল দেশ বিভাজন৷ এই অবাঞ্চিত দেশ বিভাজন জাতি, ধর্ম, সম্প্রদায় নির্বিশেষে সকলকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে৷ এর ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষ ভিটেমাটি হারা হয়েছেন৷ লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে৷ মহিলার মান হানি হয়েছে৷ ধর্মের ভিত্তিতে দেশ বিভাজনের নায়ক মহম্মদ আলি জিন্নাকেও পাকিস্তানের মানুষ শান্তি দেয় নি৷ জিন্নাও শেষপর্যন্ত রিফিউজি হয়েছিলেন৷ ‘বিভাজন বিভিষিকা স্মৃতি দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এমন মন্তব্য করেন রাজ্য পরিবহণ নিগমের অধ্যক্ষ মিশনরঞ্জন দাস৷

করিমগঞ্জ শহরের বঙ্গ ভবনে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি আরও বলেন, ব্যক্তিগত লাভের জন্য যারা দেশভাগকে মেনে নিয়েছিলেন, তাদেরও শেষ জীবন সুখকর হয়নি৷ দেশভাগের যন্ত্রণা নিয়ে ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট দেশভাগ হয়েছিল৷ সেদিন ১৪ আগস্ট জন্ম নেয় পাকিস্তান৷ পরের দিন ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতা দিবস পালন হয়৷ এই ১৪ আগস্ট দিনটিকেই ‘বিভাজন বিভিষিকা স্মৃতি দিবস’ হিসাবে পালন করা হয়৷ এই ঐতিহাসিক দিনের নেপথ্যে রয়েছে বিভাজনের করুণ স্মৃতি৷ ২০২১ সাল থেকে পালিত হচ্ছে এই দিন৷ যারা প্রকৃত দেশপ্রেমিক ও স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন, তারাও দেশভাগ মেনে নিতে পারেননি বলে এদিনের আলোচনা সভায় উল্লেখ করেন মিশন৷

দেশ বিভাজনের ফলে নিজদেশে পরবাসী হয়ে যারা প্রাণ দিয়েছিলেন তাঁদের স্মরণেই ১৪ আগস্ট ‘বিভাজন বিভিষিকা স্মৃতি দিবস’ পালন করা হয়ে থাকে৷ ‘বিভাজন বিভিষিকা স্মৃতি দিবস’ সেই সব ভারতীয়দের স্মরণ করার উপলক্ষ্য যাঁরা দেশভাগের সময় নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন৷ দেশ বিভাজনের ফলে যাঁরা ভিটেমাটি, ধনসম্পত্তি হারিয়ে ছিন্নমূল উদ্বাস্তু হওয়ার যন্ত্রণা সহ্য করতে বাধ্য হয়েছিলেন, তাঁদের কষ্ট ও সংগ্রামের কথা স্মরণ করাই হল ‘বিভাজন বিভিষিকা স্মৃতি দিবস’র মূল উদ্দেশ্য বলে এদিনের আলোচনা সভায় উল্লেখ করেন মিশন৷

‘বিভাজন বিভিষিকা স্মৃতি দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত এদিনের আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে প্রাসঙ্গিক বক্তব্য পেশ করেন জেলা তফশিল উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান কৃষ্ণ দাস, বিজেপি শহর মণ্ডল সভাপতি কিশোর দে, সরিষা-মহিশাষন মন্ডল সভানেত্রী শান্তা চৌধুরী, বারইগ্রাম-শনবিল মন্ডলের সভাপতি অমৃত পাল প্রমুখ৷

এদিন দুপুরে পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী জেলা বিজেপির ব্যবস্থাপনায় এ উপলক্ষে শহরে এক মৌন মিছিল বের হয়৷ জেলা বিজেপির সদর কার্যালয় শ্যামাপ্রসাদ স্মৃতিভবন থেকে মৌন মিছিল যাত্রা শুরু করে৷ মিছিলটি স্টেশন রোড, শিববাড়ি রোড হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক পরিক্রমা করে বঙ্গ ভবনে এসে সমাপ্ত হয়৷ দেশ বিভাজনের বিভিন্ন স্মৃতি সম্বলিত প্লেকার্ড নিয়ে দলীয় নেতা কর্মীরা মৌন মিছিলে পা মেলান৷ নেতৃত্বে ছিলেন বিজেপি সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য৷ উপস্থিত ছিলেন মিশনরঞ্জন দাস, অমরেশ রায়, জেলা তফশিল উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান কৃষ্ণ দাস, দেবব্রত সাহা, বিজেপি শহর মণ্ডল সভাপতি কিশোর দে, সরিষা-মহিশাষন মন্ডল সভানেত্রী শান্তা চৌধুরী, বারইগ্রাম-শনবিল মন্ডলের সভাপতি অমৃত পাল সহ দলের বিভিন্ন স্তরের কার্যকর্তা ও কর্মী-সমর্থকরা৷

Show More

Related Articles

Back to top button