Barak Valley

করিমগঞ্জে ভাষা শহিদদের স্মরণ বরাক বঙ্গের

করিমগঞ্জ : ভাষা শহিদ দিবসে বরাক উপত্যকায় ১৯৬১, ৭২, ৮৬, ৯৬ সালে আত্মাহুতি দেওয়া শহিদদের শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়ে তাঁদের স্মরণ করেছে বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন (বরাকবঙ্গ)।

আজ ১৯শে মে করিমগঞ্জ শহরের শম্ভুসাগর উদ্যানে জাতীয় শহিদ বেদি তলে বাংলা ভাষা শহিদদের শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. রাধিকারঞ্জন চক্রবর্তী ছিলেন প্রধান বক্তা। তিনি শহিদ দিবস সম্পর্কে বর্তমান প্রজন্মের উদাসীনতার জন্য আক্ষেপ ব্যক্ত করেন। উনিশের চেতনাকে আরও জাগ্রত করার আহ্বান জানিয়ে ড. রাধিকারঞ্জন বলেন, বরাক উপত্যকায় মাতৃভাষার অধিকার পরোক্ষভাবে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা এখনও চলছে। তবে এ বিষয়ে পুরোপুরি সচেতন রয়েছে বরাকবঙ্গ।

তিনি বলেন, বরাক উপত্যপকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন মাতৃভাষা ছিনিয়ে নেওয়ার প্রতিবাদে সোচ্চার। বলেন, সম্মেলনের অনেক দাবি রয়েছে। এর অধিকাংশই পূরণ হয়নি। তিনি বলেন, ১৯৬১ সালের আগে যে আবেগে সংগ্রাম পরিষদ গঠন হয়েছিল, সেই আবেগের চেতনা আজকের দিনে নেই। বতর্মান প্রজন্মকে সেই মতো ঐক্যবদ্ধ করতে আমরা ব্যর্থ হচ্ছি। বলেন, মাস্টার সূর্য সেন পাঠদানের পাশাপাশি ছাত্রদের দেশের সেবার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। কিন্তু আমরা এর সিঁকিভাগও পারিনি। আমাদের ছেলেমেয়েরা শহিদ দিবসের তাৎপর্য জানে না। এ সব নিয়ে ভাবা দরকার। তাদের মধ্যে উনিশ সহ অন্যান্য শহিদ দিবসের চেতনা জাগ্রত করতে হবে। এজন্য সবাইকে নিজে থেকে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

ড. চক্রবর্তী বলেন, এখন পর্যন্ত শহিদ পরিবারের সদস্যরা কোনও সরকারি সাহায্য পাননি। শিলচরে শহিদ স্মারক তৈরির জন্য জায়গা দিতে পারেননি জেলাশাসক। তবে এ সব নিয়ে বরাকবঙ্গ সোচ্চার রয়েছে। তাঁর বক্তব্যে বরাকের বঞ্চনার কথাও ওঠে এসেছে। কবি শক্তিপদ ব্রক্ষ্মচারীর কবিতা দিয়ে ভাষণ শেষ করেন তিনি।

বরাক উপত্যরকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. রাধিকারঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, কবি শক্তিপদ যে আত্মপরিচয়ের কথা বলেছেন সেটা ধোয়াচ্ছন্ন। এ থেকে বেরিয়ে আসার পথ খুঁজতে হবে।

৬১-এর ভাষা আন্দোলনের সৈনিক সুখেন্দুবিকাশ পাল আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, বতর্মানে ছাত্রছাত্রীরা ভাষা শহিদদের বিষয়ে না জানা দুর্ভাগ্যের কথা। তাঁদের এ বিষয়ে অবগত করতে হবে। ভাষার মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখতে সবাইকে একত্রিতভাবে কাজ করতে হবে।

সৌমিত্র পালের পৌরোহিত্য আয়োজিত অনষ্ঠানে প্রাসঙ্গিক বক্তব্য পেশ করেছেন সম্মেলনের শহর সমিতির সভাপতি সম্পাদক নীলজকান্তি দাস, অরবিন্দ পাল, সুলেখা দত্তচৌধুরী, অধ্যাপক নির্মলকুমার সরকার, বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ, এএসটিসি-র চেয়ারম্যান মিশনরঞ্জন দাস, সাংবাদিক মিহির দেবনাথ, নেপালকৃষ্ণ ধর, জেলা কংগ্রেস সভাপতি রজত চক্রবর্তী সহ অন্যরা।

করিমগঞ্জ পুরসভার পক্ষে শ্রদ্ধা জানান উপ-পুরপতি সুখেন্দু দাস, প্রেস ক্লাব করিমগঞ্জ, ভারত বিকাশ পরিষদ, জেলা বিজেপি, কংগ্রেস, ইনার হুইল ক্লাব, ক্লাব হিন্দুস্তান, বাংলা সাহিত্য সভা অসম, জেলা ক্রীড়া সংস্থা, গীতি বিতান সংগীত বিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্তরের পদাধিকারীরা।

Show More

Related Articles

Back to top button