Barak Valley

‘পাঞ্চজন্য সাহিত্য আড্ডা’-র আরশি-৩ উন্মোচিত

পাঞ্চজন্য রায়, করিমগঞ্জ : আজ “পাঞ্চজন্য” ( সাহিত্য আড্ডা)’র তৃতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে অনুষ্ঠানে আয়োজনে উন্মোচিত হ’ল বার্ষিক মুখপত্র আরশি-৩ করিমগঞ্জ সেটেলমেন্ট রোডস্থিত বিশ্বরূপা বিবাহ ভবনে। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন কবি সাহিত্যিক চিত্রকরদের সৃজন সমৃদ্ধ এই সাহিত্য পত্রে রয়েছে বাংলা, ইংরেজি, হিন্দি, অসমীয়া ভাষার সাহিত্য। রয়েছে কবিতা, গল্প, গান, রম্যরচনা, অনুগল্প, প্রবন্ধ ইত্যাদির সম্ভার। অনুষ্ঠানে কোলকাতা, আগরতলা, জোলাইবাড়ি, ত্রিপুরা, ধর্মনগর, কৈলাসহর, শিলচর, হাইলাকান্দি, করিমগঞ্জ ইত্যাদি বিভিন্ন জায়গার প্রায় দেড় শতাধিক লোক উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানের সভাপতি ছিলেন হাইলাকান্দির বিশিষ্ট কবি মানিক চক্রবর্তী মহাশয়। সভাপতির সঙ্গে মঞ্চপোবিষ্ঠ ছিলেন সুব্রত পাল, স্বরাজ নন্দী, শঙ্কর সাহা,নিতু ভূষণ দাসগুপ্ত,সালেহা খানম চৌধুরী,অলক মুখার্জী।গুণীজন সংবর্ধনায় বিভিন্ন বিষয়ের জন্য যাঁদেরকে সম্মাননা দেওয়া হয় তাঁরা হলেন হাইলাকান্দির কবি মানিক চক্রবর্তী, হাস্যরসিক বিধুভূষণ দাস , বহুভাষিক কবি রবীন্দ্রনাথ কাশ্যপ, আগরতলার বিশিষ্ট কবি শঙ্কর সাহা , ধর্মনগরের বিশিষ্ট কবি সুজিৎ কর, সংস্কৃতি প্রেমী অলক মুখার্জী, কৈলাসহরের বিশিষ্ট আবৃত্তিকার সুতপা রায়, কোলকাতার সংস্কৃতি প্রেমী গীতা নন্দী , বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী গোপা গুপ্ত ,শিলচরের বিশিষ্ট নাট্যকার জুটি শান্তনু সেনগুপ্ত ও অনুরাধা সেনগুপ্ত, করিমগঞ্জের বিশিষ্ট আবৃত্তিকার ও বাচিক শিল্পী পিনাকী ধর , বিশিষ্ট কবি, সঙ্গীত শিল্পী মল্লিকা দাস চৌধুরী, বিশিষ্ট তবলা বাদক মনোজিৎ দাস, বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী ডা. অতনু বিজয় দাস, রবীন্দ্র রচনাবলীর চিত্ররূপ দেওয়া শিল্পী সুদীপ্তা দে চৌধুরী,গল্পকার ছন্দা ঘোষ, বিলোনিয়া ত্রিপুরার বিশিষ্ট কবি খোকন সাহা মহাশয় প্রমুখকে।

উল্লেখ্য বার্ষিক মুখপত্র আরশি-৩ উৎসর্গিত হয় করিমগঞ্জের বিশিষ্ট আইনজীবী প্রয়াত আব্দুল খালিক মহাশয়ের উদ্দেশ্যে। এতে সমাজের প্রতি করা তাঁর জীবনের কিছু উল্লেখযোগ্য অবদানের কথা বর্ণিত হয়েছে। বর্ণময় এই অনুষ্ঠানে ছিল নানান চমক।বিশেষ আকর্ষণ ছোট্ট শিল্পী আয়ূষী বন্দ্যোপাধ্যায় এর সহস্তে তৈরি সুস্বাগতম কার্ড যা সবাইকে অনুষ্ঠান স্থলে প্রবেশ পথেই দেওয়া হয়। তারপরই চোখে পড়ার মতো একটা ফেব্রিক পেইন্ট,লাগানো ছিল lectern এর গায়ে।এঁকেছেন ষাটোর্ধ্ব গল্পকার শিল্পী ছন্দা ঘোষ মহাশয়া।

মঞ্চে উপবিষ্টদের উত্তরীয় ও পুষ্পস্তবক ছাড়াও দেওয়া হয় পোড়ামাটির থালায় শিল্পী ধ্রুবজ্যোতি ঘোষের আঁকা ফলক। শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয়ের ভরাট গলায় গুরু বন্দনা ও নব আনন্দে গেয়ে যাই..উচ্চারণের মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠান।স্বাগত ভাষণে অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্যে ব্যাখ্যা করেন পরিবারের সহ পরিচালিকা ধ্রুবজ্যোতি ঘোষ মহাশয়া। প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন পরিবারের সব শিল্পীরা।

পাঞ্চজন্যের থিম সঙ্গীত গেয়েছেন বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী মল্লিকা দাস চৌধুরী মহাশয়া।মিষ্টি মুখে ছিল শম্পা ধর মহাশয়ার সহস্তে তৈরি ‘পাঞ্চজন্য’ লেখা ক্ষীরের সন্দেশ। তৎসঙ্গে ছিল চা সহযোগে কালাকাঁদ ও আলুর চপ। শিশুশিল্পী থেকে জ্যেষ্ঠ শিল্পী সকলের নৃত্য, গীত, কীর্তন,আবৃত্তি, শ্রুতি নাটক,গান ও কবিতা কোলাজ ইত্যাদির মাধ্যমে এর চমৎকার উপভোগ্য সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল তৈরি হয়েছিল।মুখ্য আকর্ষণ ছিল মীরা বনিক মহাশয়ার নৃত্য পরিবেশন, পূবালী দাশ পুরকায়স্থের আবৃত্তি,প্রান্তিকা ধর ও পিনাকী ধর মহাশয়ের গান-কবিতার কোলাজ, শান্তনু সেনগুপ্ত ও অনুরাধা সেনগুপ্তের শ্রুতি নাটক,বনশ্রী দাস ও ডা. অতনু বিজয় দাসের গান, প্রিয়াঙ্কা দাস চৌধুরীর কীর্তন। শিশুশিল্পীরা হলেন- আয়ূষী বন্দ্যোপাধ্যায়,আরাধ্যা বন্দ্যোপাধ্যায়,সানভী পাল, শ্রীহান পাল, অদ্রিজা পাল, পৃষা দেব আরও অনেকে।

উপস্থিত সবাইকে উপহার হিসেবে দেওয়া হয় বাঁকুড়ার মৃৎশিল্প ট্যেরাকোটার কাজ করা পোড়ামাটির বাদ্য শঙ্খ আর প্রশংসা পত্র। রবীন্দ্র জয়ন্তীতে যে সমস্ত কচিকাঁচারা আন্তর্জালিক মাধ্যমে অংশগ্রহণ করেছিল তাদেরকে দেওয়া হয় সার্টিফিকেট, রবিঠাকুরের বই ও কলম। সকাল ১০-৩০এ শুরু হয়ে অনুষ্ঠান সাবলীল গতিতে চলতে থাকে বিকেল ৪:৩০অবধি। মধ্যে ছিল রসনাতৃপ্ত মধ্যাহ্ন ভোজন। সমস্ত অনুষ্ঠান পরিচালনা করেছেন পরিবারের কর্ণধার শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয়। সব মিলিয়ে এক জমজমাট অনুষ্ঠান ছিল সেদিন। পুরো অনুষ্ঠান জুড়ে যাঁরা নিঃশব্দে কাজ করেছেন তাঁদের মধ্যে দু’জন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি হলেন সুদীপ্তা দে চৌধুরী ও মনোজিৎ দাস।

Show More

Related Articles

Back to top button