Barak Valley

পুরুলিয়ার বিখ্যাত ছৌ নাচে মাতল করিমগঞ্জ শহর

করিমগঞ্জ : পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়ার বিখ্যাত ছৌ নাচে মাতল করিমগঞ্জ জেলার সদর শহর। ঐতিহ্যবাহী কুশিয়ারাকুল-এর পুজো মণ্ডপে ছৌ নৃত্যের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে মহিষাসুরমর্দিনী দুর্গার রূপ। মহিষ, সিংহ, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ সবকিছুই ছিল।

বরাক উপত্যকায় সম্ভবত এই প্রথম হওয়ার ফলে ষষ্ঠীর দিন থেকে সপ্তমী, বলতে গেলে ছিল লোকে-লোকারণ্য। পাশাপাশি মহিলা ব্যান্ড দর্শনার্থীদের নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছে। এক কথায়, দুদিনেই বাজিমাত করেছে কুশিয়ারকুল-এর ব্যবস্থাপনা।

সীমান্ত শহরের বিগ বাজেটের পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম পুজো কুশিয়ারা নদীর পাড়ে টাউন কালীবাড়ি রোডের ঐতিহ্যবাহী কুশিয়ারকুল ক্লাবের দুর্গোত্‍সব এ বছর ৫০ বছরে পা রেখেছে। অবশ্য দীর্ঘবছর ধরেই শহরের পুজো মানচিত্রে অন্যতম চেনা নাম। গোটা জেলার মানুষের কাছে প্রতি বছর একটি বড় আকর্ষণ থাকে কুশিয়ারকুল ক্লাবের দুর্গাপুজো থিম। সেই ধারাকে অব্যাহত রাখতে এবং ৫০ বছরের পুজোকে স্মরণীয় করে রাখতে এবারও বিশেষ থিম তৈরি করা হয়েছে।

এবার একদিকে সুবর্ণজয়ন্তী, অন্যদিকে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সুন্দরী শ্রীভূমি ভ্রমণের ১০৪ বছর পূর্তিতে কুশিয়ারকুল-এর মণ্ডপে এবার কবিগুরুর ছোঁয়াও রয়েছে। রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টিকে পুজোর থিম হিসেবে বেছে নিয়েছেন উদ্যোক্তারা। শান্তিনিকেতন থেকে জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়ি, এমন-কি সহজপাঠ কিছুই বাদ যাচ্ছে না এবারের থিমে। পুজোর শুরু থেকে শেষ শুধুই রবীন্দ্র ভাবনা। বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিকের সৃষ্টিই মণ্ডপের প্রধান বিষয়বস্তু। পাশাপাশি থাকছে তাঁর লেখা বই। মোট কথা কবিগুরু নামাঙ্কিত হচ্ছেন তাঁরই সুন্দরী শ্রীভূমিতে, সাহিত্যপ্রেমী রবীন্দ্র অনুরাগীরা প্রাণের ছোঁয়া পেয়েছেন এবারের আয়োজনে। সুবর্ণজয়ন্তিতে পুরোপুরি রাবীন্দ্রিক চমক এবার কুশিয়ারকুল-এ।

পুজো কমিটির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন অসিত ভূষণ দেব, সম্পাদকের দায়িত্বভার সামাল দিচ্ছেন হীরালাল সূত্রধর। মণ্ডপ তৈরির দায়িত্বে ছিলেন করিমগঞ্জের রাজু বণিক। কলকাতার মৃত্‍শিল্পী সমীর পালের তত্ত্বাবধানে প্রতিমা গড়া হয়েছে শহরের প্রণবানন্দ শিল্পালয়ে। আলোকসজ্জায় রয়েছে নতুনত্ব। পঞ্চমী থেকে দ্বাদশী অবধি রয়েছে নানা আয়োজন, নানান অনুষ্ঠান। এর সঙ্গে মহিলা ব্যান্ড সহ ছৌ নাচ। রবীন্দ্র সংগীত পরিবেশন হচ্ছে লাউড স্পিকারে। শিশুদের আকর্ষিত করতে রয়েছে রংপা ও জেডরিং। পঞ্চমী তিথিতে স্মরণিকা উন্মোচন করেছেন করিমগঞ্জ রামকৃষ্ণ মিশনের সহ-সম্পাদক স্বামী রামভদ্রানন্দজি মহারাজ। ষষ্ঠীতে স্থানীয় তিন প্রবীণ ব্যক্তিকে দিয়ে মণ্ডপ উদ্বোধন করা হয়েছে। দ্বাদশী তিথিতে প্রতিমা নিরঞ্জন হবে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মাধ্যমে, জানিয়েছেন পূজা কমিটির পদাধিকারীরা।

Show More

Related Articles

Back to top button