Updates

বাংলাদেশের চট্টগ্রামে হিন্দুদের উপর হামলা

ওয়েবডেস্ক,ঢাকা,১০ নভেম্বর : একদিকে ফিলিস্তিনের মানুষের স্বাধীনতার জন্য আওয়াজ তুলছে বাংলাদেশের মুসলিম সম্প্রদায়ের মৌলবাদীরা । অন্যদিকে তারা নিজের দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের কার্যত তৃতীয় শ্রেণীর নাগরিক করে রেখে দিয়েছে । প্রায় প্রতিদিনই মুসলিমদের হাতে আক্রান্ত হতে হচ্ছে সেদেশের হিন্দুদের ।

ফের একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল বাংলাদেশে । চট্টগ্রামে এক হিন্দু সাধুর উপর ইসলামি সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে । অন্যদিকে বাংলাদেশের এক হিন্দু মুক্তিযোদ্ধাকে খুন করে লাশ বস্তায় ভরে ভারতে পাঠানোর হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগের এক নেতার বিরুদ্ধে ।

জানা গেছে,হিন্দু সাধুর উপর হামলার ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলার নাপোড়া সার্বজনীন লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রমে। ওই আশ্রমের খোদ অধ্যক্ষ শ্রীমত্‍ স্বামী শ্রদ্ধানন্দ ব্রহ্মচারী আক্রান্ত হয়েছেন । স্থানীয় মুসলিম জনতা আচমকা আশ্রমে চড়াও হয়ে শ্রদ্ধানন্দ ব্রহ্মচারীর উপর প্রাণঘাতী হামলা চালায় । নির্মমভাবে মারধরের ফলে জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তিনি । তিনি মারা গেছেন মনে করে পালিয়ে যায় জিহাদিরা । পরে আশপাশের হিন্দুরা তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করে । ওই সাধুর অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে ।

অন্যদিকে বাংলাদেশের পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানী উপজেলার পত্তাশি ইউনিয়নের বাসিন্দা মুক্তি যোদ্ধা পরিতোষ চন্দ্র হালদারকে খুন করে লাশ বস্তায় ভরে ভারতে পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সদস্য মোহাম্মদ আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে । একটি ভিডিওতে ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন পরিতোষ চন্দ্র হালদার । বৃহস্পতিবার রেকর্ড করা ওই ভিডিওতে তিনি বলেছেন,’গতকাল আমাদের পরিষদে ব্যারাকের প্রতিবেদন সম্বন্ধে একটা মিটিং ছিল । মিটিংয়ের পর আমাদের জলখাবার(নাস্তা) দিতে একটু দেরি হয়েছিল । সেই কারনে দুই নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আলমগীর হোসেন আমায় জিজ্ঞাসা করে তার এক ঘনিষ্ঠকে জলখাবারের স্লিপ দেওয়া হয়নি কেন । উত্তরে আমি জানাই যে তালিকায় তার নামই নেই । তখন সে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। পরে আমি সেখান থেকে চলে আসার চেষ্টা করলে আলমগীর আমার জামার কলার ধরে । তারপর আমাকে হুমকি দেয়, ‘তোকে খুন করে লাশ বস্তায় ভরে ভারতে পাঠিয়ে দেবো ।’ এছাড়া বলে, ‘তোর ঠ্যাং ভেঙে খালে ফেলে দেবো’ ইত্যাদি । 

তিনি বলেন,’এই জন্যই কি আমি দেশ স্বাধীন করলাম ? দেশ স্বাধীন করে যদি বাড়ি ঘরে থাকতে না পারি তাহলে মুক্তিযুদ্ধ করে কি লাভ হল আমার ? আমি আপনাদের কাছে এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে এটুকু বিচার চাই ।’

উল্লেখ্য, ২০০৩ সালের ১৮ নভেম্বর রাতে বাংলাদেশের বাঁশখালীর সাধনপুর শীলপাড়ায় তেজেন্দ্রলাল শীলের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে ১১ জনকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছিল স্থানীয় মুসলিম কট্টরপন্থীদের দল। ওই ঘটনায় এখনো ঘাতকদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি । ফলে মুক্তিযোদ্ধা পরিতোষ চন্দ্র হালদারের ‘বিচার’-এর প্রত্যাশা যে পূরণ হবে না তা সহজেই অনুমেয় ।।

Show More

Related Articles

Back to top button