শক্তি-আরাধনায় করিমগঞ্জের কুসুমাঞ্জলি ক্লাব
![](https://newstimebarak.com/pics/2023/11/FB_IMG_1699530532721-720x470.jpg)
করিমগঞ্জ : হাতে আর মাত্র তিনদিন। এর পরই শ্যামা মায়ের পুজো, দীপাবলির আনন্দে মেতে উঠবে ৮ থেকে ৮০। পূজা কমিটিগুলির শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা তুঙ্গে। মণ্ডপ থেকে থিম, প্রতিমা থেকে আলোকসজ্জা সবেতেই জোরকদমে চলছে কাজ।
ঠিক একই চিত্র দেখা গেছে সীমান্ত শহরের শ্যামাপ্রসাদ রোড-বিপিন পাল রোড ও শিলচর রোডের সর্বজনীন কালীপূজা কমিটির।
ক্লাব কুসুমাঞ্জলির পরিচালনায় কাঁধে কাধ মিলিয়ে চলছে প্রস্তুতি। এবার ক্লাবের রজতজয়ন্তী বর্ষ। তাই বাড়তি পাওনা। সেরার লড়াইয়ে এবার আরও একধাপ এগিয়ে তারাও। করিমগঞ্জের কালী পূজাগুলির মধ্যে কুসুমাঞ্জলি বরাবরই এক বিশেষ স্থান অধিকার করে। পুজোর থিম, মূর্তি, আলোকসজ্জা সবকিছুতেই প্রতিবারই একটা অভিনবত্ব আশা করেন করিমগঞ্জবাসী। এবারও তার অন্যথা হবে না।
জেলার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রতিমা তৈরি করছেন তাঁরা। ২৫-তম বর্ষে প্রধান আকর্ষণ ২০ ফুট উঁচু এবং ৩৩ ফুট প্রস্তের বিশাল কালী মূর্তি। মূর্তি তৈরি করছেন বরাক উপত্যকার প্রতিষ্ঠিত করিমগঞ্জের ‘প্রতিমা শিল্পালয়’-এর মৃত্শিল্পী। শ্যামা মা ছাড়া থাকছেন চৈতন্য ও কৃষ্ণ এবং কৃষ্ণ ও মীরাবাঈ। ইতিমধ্যে এই পুজো জনমানসে দারুণ প্রভাব ফেলেছে। যিনি কৃষ্ণ তিনিই কালী, সেই বিশ্বাসকে পাথেয় করে এবার থিম রচিত হয়েছে কুসুমাঞ্জলির। তার ভিত্তিতেই গড়ে তোলা হচ্ছে পুজোর মণ্ডপ।
কুসুমাঞ্জলির এবারের পুজো-বাজেট আনুমানিক ১৫ লক্ষ টাকা। এর মধ্যে শুধু প্রতিমা বাবদ বাজেট ১ লক্ষ টাকা। জেলার সর্বোচ্চ কালী প্রতিমা ও থিমের আকর্ষণ ছাড়াও থাকছে নজরকাড়া আলোকসজ্জা। সব মিলিয়ে জেলার এবার অন্যতম সেরা আকর্ষণীয় কালী পুজো হয়ে উঠতে চলেছে কুসুমাঞ্জলি ক্লাবের পুজো। এ বছর ক্লাবের মণ্ডপ সৃজনে রয়েছেন স্থানীয় শিল্পী পরিমল সাহা। বাহারি আলোকসজ্জায় রয়েছেন শিল্পী নিপ্পন কর। এবারের পুজোয় সভাপতি হিসেবে শুভঙ্কর দেবরায়, সম্পাদক পদে কেশব দাস এবং কোষাধ্যক্ষ হিসেবে রয়েছেন দেবজ্যোতি দেব ও শুভঙ্কর দাস।
রজতজয়ন্তী বর্ষের পুজো উপলক্ষ্যে নানা কার্যসূচিও গ্রহণ করেছেন ক্লাব কর্তৃপক্ষ। ১১ নভেম্বর বিকেল সাড়ে তিনটায় মণ্ডপের উদ্বোধন করবেন করিমগঞ্জ রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী প্রভাসানন্দজি। এদিন রজতজয়ন্তী বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে ক্লাব কুসুমাঞ্জলির থিম সংগীতও উদ্বোধন হবে। এর পর মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হবে। ১২ নভেম্বর মায়ের পুজো, অঞ্জলি প্রদান এবং রাতে মহাপ্রসাদ বিতরণ করা হবে। ১৩ নভেম্বর সন্ধ্যা সাতটায় আরতি এবং রাত আটটা থেকে থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ১৪ নভেম্বর সকাল আটটা থেকে বিশ্বশান্তি কামনায় সপ্তসতী চণ্ডী মহাযজ্ঞ অনুষ্ঠিত হবে। বেলা ১-টা থেকে প্রসাদ বিতরণ, সন্ধ্যা সাতটায় আরতি এবং রাত আটটা থেকে শুরু হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ১৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় আরতি এবং ১৬ নভেম্বর বিকেল পাঁচটায় মায়ের প্রতিমা নিরঞ্জন করা হবে করিমগঞ্জের বিসর্জন ঘাটে।
উদ্যোক্তাদের দাবি, জেলায় এই প্রথম এত বড় কালী প্রতিমা দেখা যাবে। সকলকে চমকে দিতে চলছে শহরের শ্যামাপ্রসাদ রোড-বিপিন পাল রোড ও শিলচর রোডের সর্বজনীন কালীপূজা কমিটি। গত বছরও দর্শনার্থীদের মনে জায়গা করেছিল এই ক্লাব। তাই তাঁদের এ বছরের প্যান্ডেলে দর্শকদের ঢল নামবে বলে আশাবাদী কর্মকর্তারা।