সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কর প্রত্যাহারের দাবি নিয়ে আন্দোলনে সুরক্ষা সমিতি
বিভিন্ন সংগঠনের সভা, মুখ্যমন্ত্রীকে স্মারকপত্র
করিমগঞ্জ : সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আরোপিত কর প্রত্যাহারের দাবিতে এবার আন্দোলনে নামছে বরাক উপত্যকা মাতৃভাষা সুরক্ষা সমিতির করিমগঞ্জ জেলা কমিটি৷ একাধিক সাংস্কৃতিক সংগঠন ও বিশিষ্টজনদের নিয়ে বৈঠক করে আন্দোলন কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেছে সমিতি৷ করিমগঞ্জের জেলা আয়ুক্তের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীকে স্মারকপত্র প্রদান করা হয় বুধবার৷ করিমগঞ্জ শহরের শিক্ষক ভবনে জেলা সভানেত্রী শিবানী বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আলোচনার সূত্রপাত করেন সাংগঠনিক সম্পাদক সুপ্রিয় দেব৷
তিনি বলেন, সম্প্রতি রাজ্য সরকার এক নির্দেশিকা জারি করে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, রাজনৈতিক দলের সভা সমিতি থেকে শুরু করে বিভিন্ন কর্মকান্ডে কর আরোপ করেছে৷ এটা একেবারে নজিরবিহীন৷ গোটা দেশে এসব ক্ষেত্রে কর আরোপের নজির নেই৷ এটা রীতিমতো কৃষ্টি-সংস্কৃতির ওপর আক্রমণ৷ এর বিরুদ্ধে রুখে না দাঁড়ালে সাহিত্য, সংস্কৃতি, কৃষ্টি বাঁচানো যাবে না৷
আইনজীবী নন্দনকুমার নাথ বলেন, বর্তমান সরকার স্বৈরাচারী শাসন কায়েম করছে৷ খাদ্যসামগ্রী, জ্বালানি, ওষুধ, বিদ্যুৎ ইত্যাদি ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত কর বৃ্দ্ধির করার পাশাপাশি এবার রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক কর বসানোর মতো স্পর্ধা দেখিয়েছে৷ ব্রিটিশরা সাধারণ মানুষের ঘাড়ে নানা কর চাপাতো৷ কিন্তু ব্রিটিশ শাসকরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কোন কর বসানোর সাহস করেনি৷ বর্তমান সরকার ব্রিটিশদেরও ছাড়িয়ে গেছে৷ এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হতেই হবে৷
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কর প্রত্যাহারের দাবিতে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলার দাবিতে বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা৷ সবাই জোরদার আন্দোলন গড়ে তোলার পক্ষে মতপ্রকাশ করেন৷
মাতৃভাষা সুরক্ষা সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক গৌতম চৌধুরী বলেন, ভাষা-সংস্কৃতির ওপর আক্রমণ নেমে এলে মাতৃভাষা সুরক্ষা সমিতি বসে থাকবে না৷ সর্বশক্তি দিয়ে ভাষা-সংস্কৃতিকে রক্ষা করতে হবে৷
বিশ্বজিৎ দাস বলেন, সংস্কৃতির ওপর আক্রমণ প্রতিরোধ আন্দোলন শুধুমাত্র সাংস্কৃতিক-সংগঠন, বিশিষ্টজনদের দিয়ে হবে না৷ সাধারণ মানুষকেও এই আন্দোলনে শরিকর করতে হবে৷ সরকারের এই সংস্কৃতি বিরোধী নির্দেশিকার কথা সাধারণ মানুষের কাছে নিয়ে যেতে হবে৷ এজন্য প্রকাশ্য কর্মসূচি হাতে নিতে হবে৷ ধরনা, বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করতে হবে৷
বুধবার করিমগঞ্জের জেলা আয়ুক্ত মৃদুল যাদবের মাধ্যমে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে স্মারকপত্র প্রদানেন সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়৷ সভায় উপস্থিত ছিলেন স্বপন বণিক, গীতা সাহা, বিষ্ণুপদ নাগ, গীর্বাণ দাস, গোপাল পাল প্রমুখ৷