Barak Valley

উল্টো রথের পথ পরিবর্তনের নড়ল না রথের চাকা!

করিমগঞ্জ : উল্টোপথে উল্টো রথ চালাতে গিয়ে বিপত্তি৷ রথের চাকা নড়লেও আটকে গেল রথ৷ রথের রশি হাতে নিয়ে টানলেন অগণিত ভক্ত৷ কিন্তু অনড় টাউন কালিবাড়ি থেকে বেড় হওয়া জগন্নথের রথ!

৭ দিন মাসির বাড়ি থেকে নিজের বাড়ি আসেন ভগবান জগন্নাথ৷ প্রথা অনুসারে রথ ও উল্টোরথ দুটোই পালন করা হয় মন্দিরে৷ ব্যতিক্রম ছিল না করিমগঞ্জ জেলার ক্ষেত্রেও৷ শহরে অন্তত ৮/১০টা রথ বের হয়৷ টাউন কালিবাড়ি থেকে রথ বেড়িয়ে শম্ভুসাগর পার্ক হয়ে সেটেলমেন্টের দিকে নয়তো রামকৃষ্ণ মিশন রোডের দিকে প্রতিবছর যাত্রা করে৷ বছরের পয বছর থেকে এভাবেই চলে আসছে রথ টানার কাজ৷

এবার দীর্ঘ বছরের নিয়ম ভেঙে উল্টো রথ উল্টোদিকে অর্থাৎ দশমী ঘাটের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়৷ মন্দির থেকে বেড়িয়ে ৫০ মিটার যাওয়ার পথে রথ অনড়৷ রথের রশি টেনে ক্লান্ত ভক্তরা৷ ভগবানের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোন কিছুই যে সম্ভব নয় তার যেন জ্বলন্ত প্রমাণ ছিল উল্টোপথে রথ নিয়ে যাওয়া৷ এককথায় এত বছর যে পথ দিয়ে রথ গিয়েছিল, এবার বিপরীত দিকে উল্টো রথ নিয়ে যাওয়া হয়৷ রথকে উল্টো দিকে নিয়ে যাওয়ার কথা কারা বলেছিলেন, সেটা এখন কেউই বলছেন না৷ টানতে টানতে রথ নড়ছে না, তখন রথের চাকার এক্সেলটি ভেঙে যায়৷ এবার রাস্তার উপর ঠাঁয় দাড়িয়ে পড়ে রথ৷ জন্মলগ্ন থেকে যা হয়নি, তাই ঘটল কালিবাড়ির রথে৷

স্থানীয় বাসিন্দা মৃণাল চক্রবর্তী জানান, ৩০ বছর থেকে দেখে আসছি রথ৷ জীবনেও যা হয় নি সেটাই হলো৷ এই ঘটনা কোন অশনি সংকেত কি না বলতে পারছি না! তবে কেন এমন হলো? ভাবতেই ভয় করছে৷ পথ পরিবর্তনে কি ভগবান নারাজ হয়ে গেলেন!

প্রাক্তন পৌর কমিশনার কল্লোল পুরকায়স্থ বলেন, অন্যবারের মতো না করে এবার উল্টো পথে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল রথ৷ তাতেই হয়েছে অঘটন৷ এবারের পথ পরিবর্তনের কারণ কেউ জানেন না৷ বিষয়গুলো ধার্মিক, আপাতত দৃষ্টিতে কিছুই বোঝা যাচ্ছে না৷ আবহকাল ধরে চলে আসা নিয়মের বিপক্ষে রথ চালাতে শত শত লোক দড়ি টানলেও এক বিন্দু সম পরিমাণ জমিও সরাতে পারেন নি৷ ইশ্বরের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গাছের পাতাও নড়ে না-এটাই যেন প্রমাণ৷ এই ঘটনাকে শুভ লক্ষণ নয় বলে মনে করছেন অনেকে৷

শেষে ভগবানকে কোলে করে নামিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় কালীবাড়িতে৷ ঠাঁয় দাড়িয়ে থাকা রথকে মঙ্গলবার নিয়ে আসা সম্ভব হয় নি৷ ফলে জায়গাতেই রথের বিভিন্ন সামগ্রী খোলা হয়৷

রথের চূড়া খোলায় নিয়োজিত জয় কুমার বলেন, রথ এগিয়ে না যাওয়ায় রাস্তার উপরেই খুলতে হচ্ছে বিভিন্ন অংশ৷ গোটা ঘটনার খবর সমগ্র জেলায় ছড়িয়ে পড়তেই জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোক সমাগম ছিল চোখে পড়ার মতো৷

Show More

Related Articles

Back to top button