করিমগঞ্জে রন্ধন কর্মীদের বিক্ষোভ কৰ্মসূচি

করিমগঞ্জ : মধ্যাহ্ন ভোজন কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি, ১২ মাসের বেতন প্রদান, নিয়মিত বেতন প্রদান, বকেয়া মিটিয়ে দেওয়া, মধ্যাহ্ন ভোজন প্রকল্পকে বেসরকারীকরণের উদ্যোগ বন্ধ করার দাবিতে রাজ্যব্যাপী ১৭ থেকে ২০ জুলাই পৰ্যন্ত চারদিনের বিক্ষোভ কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবে আজ মঙ্গলবার করিমগঞ্জ জেলাশাসক কার্যালয় চত্বরেও পালিত হয়েছে।
বিভিন্ন দাবি সংবলিত স্লোগানে রন্ধন কর্মীরা উত্তাল করে জেলাশাসক চত্বর।
উল্লেখ্য, রন্ধন কর্মীদের ছয়দফা দাবির ভিত্তিতে রাজ্যব্যাপী বিক্ষোভ আন্দোলনের কর্মসূচি নেয় সারা অসম মধ্যাহ্ন ভোজন কর্মচারী ইউনিয়নের অসম রাজ্য কমিটি।
আজকের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে ইউনিয়নের জেলা সভাপতি পার্থ হাজরা বলেন, অসমে রন্ধন কর্মীরা মাসিক মাত্র দেড় হাজার টাকা বেতন পান, তা-ও সময়মতো পান না। এখনও করিমগঞ্জ জেলার এক বড় অংশের রন্ধন কর্মীর বেতন আটকে রয়েছে। কখনো সরকারের তহবিল না থাকার অজুহাতে, কখনো কর্মীদের গাফিলতিতে তাঁদের বেতন বন্ধ রাখা হয়েছে। রাজ্যের সবচেয়ে গরিব অংশের মহিলারা মাসিক এক হাজার টাকা বেতনে স্কুলগুলিতে রান্নার কাজ করেন। তাঁদের দৈনিক মজুরি ৩৩ টাকা। সরকার এই বেতনও সময়মতো মিটিয়ে দেয় না। অথচ উত্সবের জন্য, হেলিকপ্টার চড়ে মন্ত্রীদের বিলাসিতার জন্য অর্থের অভাব হয় না। ভারতবর্ষের অনেক রাজ্যে রন্ধন কর্মীরা মাসিক ১৬ হাজার টাকা মজুরি পান, অবসরের সময় এককালীন সাহায্য, দুর্ঘটনার সাহায্য, উত্সব ভাতা ইত্যাদি পেয়ে থাকলেও অসমে মাসিক অনিয়মিত দেড় হাজার টাকা ছাড়া কিছুই পান না।
তিনি বলেন, সরকার মধ্যাহ্ন ভোজন প্রকল্পকে বেসরকারি মালিকের হাতে দিতে চাইছে। স্কুল অবলুপ্তি, সংযুক্তিকরণের ফলে গরিব রন্ধন কর্মীরা কাজ হারিয়েছেন, সরকার তাঁদের হাতে কানাকড়িও তুলে দেয়নি। এই ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সারা রাজ্যে রন্ধন কর্মীরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন।
সিআইটিইউ-এর জেলা সম্পাদক তরুণ গুহ বলেন, প্রতিদিন জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। রেশনে চাল কমিয়েছে সরকার। বাজারে আগুন। এই অবস্থায় রন্ধন কর্মীদের সামান্য এক হাজার টাকা বন্ধ করে রাখা হয়েছে। বাজারে জিনিসপত্রের দাম কমাতে রেশনে খাদ্য সামগ্রী না দিয়ে, কালোবাজারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মিয়াঁ রাজনীতি করে রাজ্যের বিভেদকে উস্কে দিচ্ছেন। গরিব ধর্মীয় ও ভাষিক সংখ্যালঘু মানুষের বিধানসভার ভিতরে কথা বলার ক্ষমতা কমানোর জন্য, উগ্র জাতীয়তাবাদ ও উগ্র হিন্দুত্ববাদের স্বার্থে নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে ডিলিমিটেশন করাচ্ছে সরকার।
জেলার শিক্ষা বিভাগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, শিক্ষা বিভাগের চরম ঔদাসিন্যের জন্য করিমগঞ্জ জেলার অনেক রন্ধন কর্মীর বেতন আটকে রয়েছে। জেলার শিক্ষা কর্মকর্তা, সর্বশিক্ষার মিশন কোঅর্ডিনেটর সহ জেলাশাসক এই দায় এড়িয়ে যেতে পারেন না। তিনি বলেন গরিব মানুষের আন্দোলন ছাড়া পথ নেই। বলেন আন্দোলনের ময়দানে রন্ধন কর্মীরা একা নন। গোটা সিআইটিইউ তাঁদের সঙ্গে রয়েছে। রন্ধন কর্মীদের এই আন্দোলন সফল হবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।