গ্রাহক প্রতারণার অভিযোগে অবশেষে চেরাগির হিন্দুস্থান হোটেল সিল করল প্রশাসন

করিমগঞ্জ : করিমগঞ্জ জেলার অন্তর্গত পাথারকান্দি থানাধীন চেরাগি বাজারে একটি লাইন হোটেলে হিন্দু ধর্মাবলম্বী জনৈক যুবকের পাতে গো-মাংস তুলে দেওয়ার ঘটনায় ব্যাপক প্ৰতিক্ৰিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছে বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। ইতিমধ্যে হোটেলের মালিক, ম্যানেজার সহ চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পাথারকান্দি থানার পুলিশ। এদিকে আজ সোমবার প্রশাসনিক ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে হোটেলকে সিল করে দেওয়া হয়েছে।
ঘটনা শনিবার রাতের। পাথারকান্দি থানা চত্বরে দাঁড়িয়ে ঘটনার বিস্তারিত জানাতে গিয়ে ভুক্তভোগী রাতাবাড়ি থানাধীন বেতুবাড়ির যুবক সুরজিৎ সিনহা বলেন, শনিবার রাতে তিনি ভিনধর্মী তাঁর দুই বন্ধুর সঙ্গে বদরপুর থেকে আসছিলেন। রাস্তায় প্রচণ্ড খিদে পাওয়ায় রাত আনুমানিক সোয়া ১২টা নাগাদ (রবিবার ভোররাত) দুই বন্ধুকে নিয়ে চেরাগি বাজারে জাতীয় সড়কের পাশে হিন্দুস্তান হোটেলে গিয়ে মুরগির মাংস সহ খাবার অর্ডার দেন। হোটেলে হিন্দুদের বিভিন্ন দেবদেবীর ফটো সাঁটা রয়েছে দেখে তিনি বিশুদ্ধ খাবারের ব্যাপারে নিশ্চিত হন। তবুও তিনি ম্যানেজারকে বলেন, দেখুন আমি হিন্দু, ভালো খাবার দেবেন।
তিনি পৃথক একটি টেবিলে বসেছিলেন। তখন সঙ্গী বন্ধুরা তাদের সঙ্গে এক টেবিলে গিয়ে বসতে বলে। তিনিও তাদের সঙ্গে এক টেবিলে গিয়ে বসেন। ইত্যবসরে মাংস সহ খাবার তাদের পরিবেশন করা হয়। তিনি পরিবেশকের কাছে জানতে চান, মাংস কি মুরগির? জবাবে পরিবেশক এবং হোটেলের ম্যানেজার একসঙ্গে বলেন, হ্যাঁ হ্যাঁ, নিশ্চিন্তে খেতে পারেন।
কিন্তু ভাতের সঙ্গে মাংস মুখে তুলতেই গন্ধ এবং স্বাদ তাঁর কাছে অন্যরকম লাগে। ভিনধর্মী দুই বন্ধুর কথায় তিনি নিশ্চিত হন, তাঁর পাতে গো-মাংস পরিবেশন করা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর বমি ভাব হয়। ছুটে যান বাইরে। বাইরে গিয়ে বমি করেন।
পরে এ নিয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাঁর কথা কাটাকাটি হয়। একসময় হোটেলে অবস্থানকারী কয়েকজন যুবক তাঁর দিকে তেড়ে আসে। অবস্থা বেগতিক দেখে পাথারকান্দি থানার ওসি এবং বিশ্বহিন্দু পরিষদের স্থানীয় জনৈক পদাধিকারীকে ঘটনাটি জানান। ঘটনা শুনে সঙ্গে সঙ্গে হোটেলে ছুটে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন ওসি।
এদিকে ঘটনার খবর দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন হিন্দু সংগঠন প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে উঠে। সন্ধ্যায় তাঁরা থানায় গিয়ে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির পাশাপাশি হোটেলটি বন্ধ করে দেওয়ার জোরালো দাবি জানান।
ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানিয়েছেন দক্ষিণ অসম প্রান্ত গোরক্ষা প্রমুখ পঙ্কজ শ্যাম। তিনি এ সব ‘জিহাদিদের’ বিরুদ্ধে কঠোর হতে প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন।