Barak Valley

চিকিৎসকের বাড়ি বিক্রিকে কেন্দ্র করে যত কাণ্ড করিমগঞ্জে!

পৌরপতিকে চিঠি-নাগরিক সভা-বয়কটের দাবি

সংবাদ সংস্থা, করিমগঞ্জ : এক চিকিসকের বাড়ি বিক্রিকে কেন্দ্র করে যত কাণ্ড করিমগঞ্জে৷ চিকিসকের বাড়ি বিক্রির ঘটনাকে কেন্দ্র করে এমন খবর চাউর করা হয়েছে, যা দস্তুরমতো চাঞ্চ‍ল্যকর৷ বাড়িটির বিক্রির প্রসঙ্গকে কেন্দ্র করে নাগরিক সভা, পৌরপতিকে খোলা চিঠি, জনাকয়েককে সামাজিকভাবে বয়কটের দাবি উঠেছে সামাজিক মাধ্যমে৷ আর এসবের নেপথ্যে রয়েছে একটি বিশেষ শব্দ৷ বিশেষ শব্দ ব্যবহারের ফলে ঘটনাটি চরম রূপ নিয়েছে৷

করিমগঞ্জ শহর থেকে বাড়ি বিক্রি করে অনেক চিকিৎসকই আগেও অন্যত্র চলে গেছেন৷ তখন এ ধরনের খবরে কোনও ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা যায় নি৷ শহরের বিশিষ্ট চিকিৎসক এবি চৌধুরী, অরিজিৎ দাশগুপ্ত, এন সি ঘোষ, বিপুলচন্দ্র ভট্টাচার্য শহর ছেড়ে চলে গেছেন৷ করিমগঞ্জে থাকাকালীন অবস্থায় বিশিষ্ট চিকিৎসক এন সি ঘোষের উপর আক্রমণ হয়েছিল৷ ঘটনার প্রতিবাদে সমগ্র জেলায় বনধ পালন হয়৷ এখানে অনেক চিকিৎসকই নিজেদের প্রতিষ্ঠা লাভ করার পাশাপাশি অর্থ রোজগার, জনসেবা সবকিছু করে গেছেন৷ যায যার বাড়ি বিক্রি করা একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়৷ কিন্তু এ যাত্রায় বিষয়টি অন্য খাতেই দেখা গেল৷

করিমগঞ্জ শহরের শম্ভুসাগর রোডে থাকা চিকিৎসক আশিস দাশগুপ্ত তাঁর বাড়িটি বিক্রি করে অন্যত্র চলে যাবেন৷ তাঁর প্রতিবেশী জনৈক বিষ্ণু নাগ সেটি ক্রয় করবেন বলে চিকিসকের সঙ্গে আলোচনা করেন৷ দু’জনের মধ্যে দরদাম হয়৷ কিন্তু নির্দিষ্ট দামের থেকে অনেক বেশি দাম উঠে বাড়িটির৷ সঙ্গত কারণে অন্য ক্রেতার সঙ্গে দাম চূড়ান্ত করেন ডা. দাশগুপ্ত৷ এতটুকু মোটামুটি ভাবে ঠিক থকলেও চিকিৎসক অধিক লাভে বাড়িটি কোনও মুসলিম ক্রেতার কাছে বিক্রি করে দিচ্ছেন বলে খবর চাউর করে দেওয়া হয়৷ হিন্দু বসতিপূর্ণ এলাকায় মুসলিম কেউ বাড়ি কিনবে! এমন গুঞ্জনে মাথায় যেন বাজ ভেঙে পড়ে একাংশ লোকের৷ যদিও ইসলাম ধর্মালম্বী কেই বাড়িটি কেনার প্রস্তাব দেননি বলে সূত্রের খবর৷ তাহলে কে রটনা করল এমন কথা? যার স্বার্থ জড়িত সে-ই এমন কথা রটনা করতে পারে বলে অনেকের অভিমত

এদিকে এ-ঘটনাকে কেন্দ্র করে করিমগঞ্জের পৌরপতি রবীন্দ্র দেবের উদ্দেশ্যে খোলা চিঠি লেখেন শহরের একাংশ বিশিষ্টরা৷ শনিবার সন্ধ্যায় নাগরিক সভায় বসেন শহরের একাংশ লোক৷ এমনকি যারা অপবাদ রটনা করেছে তাদেরকে সামাজিক বয়কটের দাবি জানানো হয়৷ সাধারণ এক বাড়ি বিক্রির ঘটনাকে কেন্দ্র করে শহরজুড়ে গল্পের ছয়লাপ৷

আসলে অন্যান্য শহরের চাইতে করিমগঞ্জ শহর অনেক ছোট৷ তাই ছোটখাটো কোনও ঘটনা ঘটলে যে যার ইচ্ছা খুশি রং চড়াতে থাকেন৷ চিকিৎসকের বাড়ি বিক্রির ঘটনাও এখন শহরে আলোচ্য বিষয়৷ অথচ, করিমগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্রের রাস্তাগুলো জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে, তা নিয়ে তথাকথিত নাগরিকদের কোনও মাথাব্যথা নেই৷ প্রয়োজন বোধ করেন নি নাগরিক সভার৷ প্রয়োজন বোধ করেননি নাগরিক সভার৷ প্রয়োজন পড়েনি মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে খোলা চিঠি লেখার৷ ডাক্তারের বাড়ি বিক্রি নিয়ে সবাই যতটা তৎপর ভগ্নদশা সড়ক নিয়ে ততটাই মৌন তারা৷ শহরের ভাঙ্গা রাস্তা দিয়ে হিন্দু-মুসলমান সবাই চলাফেরা করেন৷ কিন্তু রাস্তা মেরামতের ব্যবস্থা গ্রহণ করানোর জন্য প্রয়োজন বোধ করছেন না কেউই৷

Show More

Related Articles

Back to top button