ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় কাটাখালে মৃত ৪, আহত ৪

মৃতদের মধ্যে বদরপুরের একই পরিবারের ৩
কাটাখাল : দুটি গাড়ির ভয়ঙ্কর সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হল একই পরিবারের ৩ জন সহ চালকের৷ শনিবার ঘটনাটি সংঘটিত হয় কাটাখাল বাইপাসে৷
ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, এদিন শনিবার দুপুর ১টা নাগাদ বদরপুর ধর্মনগর কলোনির ব্রজগোপাল দাস (৬২), তাঁর স্ত্রী গোপা দাস (৫৫), ভাই রমেন্দ্র নারায়ণ দাস (৬৮) ডাক্তার দেখানোর জন্য একই এলাকার অজিত দেবনাথের (৩৮) ইয়োন গাড়ি রিজার্ভ করে শিলচরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন৷ কাটাখাল বাইপাসের কালীনগর ৫ম খন্ডের সাদ্দামপাড়ায় আসার পর শিলচর-করিমগঞ্জ ৩৭ নং জাতীয় সড়কের বাঁকে অন্য একটি অল্টো গাড়িকে (AS 10 F 3454) ওভারটেক করতে গিয়ে শিলচরে দিক থেকে দ্রুত গতিতে আসা একটি অল্টো গাড়ির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে৷ ইয়োন গাড়িটি সড়কের অনেক নীচে জলাশয়ে পড়ে৷ এতে ঘটনাস্থলেই দু’জনের মৃত্যু হয়৷ বাকি দু’জনের মৃত্যু হয় কালীনগর সরোজিনী প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে৷ দুর্ঘটনা এতটাই ভয়ঙ্কর ছিল যে, দুটি গাড়ির সংঘর্ষের বিকট শব্দে এলাকার লোকজন আঁতকে উঠেন৷
হত ব্রজগোপাল দাস জনস্বাস্থ্য বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী৷ তাঁর ভাই রামেন্দ্র নারায়ণ দাস জলসম্পদ বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী ছিলেন৷ তাঁরা যথাক্রমে বদরপুর প্যারাগন জুনিয়র কলেজের পদার্থ বিজ্ঞানের অধ্যাপক বর্ণালী দাসের মা-বাবা-কাকা৷ দুই ভাইয়ের অত্যন্ত অমায়িক ব্যবহার ছিল বলে জানা গেছে৷
এদিকে, হত গাড়ি চালক অজিত দেবনাথের বদরপুর শহরে জুয়েলারি ব্যবসা রয়েছে৷ পাশাপাশি ইয়োন গাড়ি কিনে মাঝেমধ্যে যাত্রী নিয়ে যাতায়াত করেন৷ কাটিগড়া পেট্রোল পাম্পের পাশে নিজের বাড়ি রয়েছে তাঁর৷ ৪ বছর হল বিয়ের৷ রয়েছে ৩ ও ৫ বছরের ১টি শিশু কন্যা ও ছেলে সন্তান৷ স্ত্রী বর্তমানে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন৷
জনৈক প্রত্যক্ষদর্শীর মতে, অল্টো গাড়িটি দ্রুত গতিতে এসে ইয়ন গাড়িকে ধাক্কা মারে৷ ফলে গাড়িটি জলাশয়ে গিয়ে উল্টে পড়ে৷ এতে গুরুতর আহত হয়ে প্রাণ হারান চালক সহ ৪ যাত্রী৷ অল্টো গাড়ির যাত্রীরাও গুরুতর আহত হয়েছেন৷ আহতরা শিলচর মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন৷ নিহতদের মরণোত্তর পরীক্ষার জন্য হাইলাকান্দি এসকে রায় সিভিল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে৷
মর্মান্তিক এই সড়ক দুর্ঘটনার জন্য বেহাল সড়ক ব্যবস্থাকে দায়ী করেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা৷ রাস্তায় বিভিন্ন স্থানে গর্তের মিছিল৷ অন্যদিকে, শিলচর-করিমগঞ্জ ৩৭ নং জাতীয় সড়কের কাটাখাল রেলওয়ে গেট থেকে শালচাপড়া নতুন ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তার পাশে থাকা গাছপালা রাস্তা ঘিরে ফেলেছে৷ রাস্তার পাশে থাকা গাছপালা কেটে ফেলার জন্য স্থানীয় জনসাধারণ হাইলাকান্দির জেলাআয়ুক্ত নিসর্গ গৌতম এবং পূর্ত বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন৷
এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার সময় আরও একটি ব্যাপার প্রত্যক্ষ করা গেছে, দুর্ঘটনায় আহতরা যখন কাতরাচ্ছেন তখন একাংশ মানুষ এদের উদ্ধারের সহযোগিতা না করে ছবি তোলায় ব্যস্ত ছিলেন৷ অবশ্য কালীনগরের একাংশ স্থানীয় মানুষ উদ্ধার কাজে পুলিশকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন৷