Barak Valley

অরবিন্দ রায় স্মরণ ঈশানকথা ওয়েব ম্যাগাজিনের

শিলচর: গত ১৭ মার্চ কলকাতায় প্রয়াত হয়েছেন অসম বরাকের (Assam) (Barak) বিশিষ্ট লেখক,যুক্তিবাদী,ও সমাজদরদী ব্যক্তিত্ব Aravind Roy। প্রয়াতের স্মৃতিতে নাজিরপট্টি, রূপম ক্লাবভবনে ঈশানকথা ওয়েব ম্যাগাজিনের পক্ষ থেকে আয়োজিত এক স্মরনসভায় বক্তাদের আলোচনায় উঠে এলো তাঁর ব্যক্তিত্বের বিভিন্ন দিক।

এদিনের সভার সঞ্চালক টিম ঈশান কথার সদস্য তথা সমাজকর্মী কৃশানু ভট্টাচার্য প্রয়াতের সাথে তাঁর যোগাযোগের কথা উল্লেখ করে বলেন যে নিঃশর্ত নাগরিক অধিকার রক্ষা মঞ্চের পক্ষ থেকে একসাথে কাজ করার সময় তাঁর সাথে অরবিন্দ বাবুর অন্তরঙ্গতা তৈরি হয়।

যৌথ সংসদীয় কমিটির কাছে এই মঞ্চের তরফ থেকে যে স্মারক লিপি দেওয়া হয়েছিল তাঁর খসড়া তৈরি করেছিলেন অরবিন্দ রায় এবং এটি কমিটির কাছে উপস্থাপন করতে গঠিত প্রতিনিধি দলে তিনি ও অরবিন্দ বাবু ছিলেন।

তিনি বলেন এই খসড়া ও সেদিন কমিটির সামনে তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য সত্যিকার অর্থেই অসাধারণ ছিল,যাতে প্রভাবিত করেছিল কমিটির সদস্যদের। এছাড়া পরবর্তীতে এন আর সির সমস্যাতে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু সেবা সংস্থা আয়োজিত সহায়তা কেন্দ্রেও তার সাথে যোগাযোগ হয়েছে, ঈশানকথা ওয়েব ম্যাগাজিনেও নিয়মিত লেখার সূত্রেও প্রয়াতের সান্নিধ্য পেয়েছেন তিনি।

টিম ঈশানকথার আরেক সদস্য জয়দীপ ভট্টাচার্য তাঁর বক্তব্যে অরবিন্দ রায়ের সাথে তাঁর যোগাযোগের কথা বলতে গিয়ে নেতাজি সেবা সংস্থা আয়োজিত এনার্সি ছুটদের সহায়তা কেন্দ্র ও ঈশানকথার সূত্র উল্লেখ করে বলেন যে আদ্যন্ত ভালো মনের এই মানুষটির সাহচর্য সবসময়ই সমৃদ্ধ করত।

ঈশানকথায় তাঁর লেখার প্রসঙ্গে তিনি বলেন যে অনেকবারই বিভিন্ন কারণে খুব অল্প সময়ের মধ্যে লেখা দেবার আবদার জানাতে হত, কিন্তু কথা দিলে কখনই বিমুখ করেননি তিনি ।

অরবিন্দ বাবুর প্রতিটি লেখায়ই তাঁর মেধা,যুক্তিবাদী মন এবং বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর গভীরতার ছাপ থাকত যার ফলে মননশীল পাঠকের পছন্দের বিষয় হয়ে উঠত প্রত্যেকটি লেখা। ঈশান কথায় প্রকাশিত দুটি লেখা এদিনের সভায় প্রয়াতের স্মৃতিতে পাঠ করে শোনান তিনি।

সায়েন্স ট্রায়াল অর্গনাইজেশনের তথা ডলু উছমধ্যমিকের অবসর প্রাপ্ত প্রভাষক অনিল পাল তাঁর বক্তব্যে এই সংস্থার সাথে অরবিন্দ রায়ের দীর্ঘ যোগাযোগের ব্যাপারে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন যে তার কর্মদক্ষতা ও মেধা তাঁদেরকে নিয়ত সমৃদ্ধ করেছে এবং অনেক ব্যাপারেই তাঁর দুরদৃষ্টি এবং নিষ্ঠা এই উপত্যাকার বিজ্ঞান কর্মী তথা শিক্ষার্থীদের জাতীয় স্তরে স্বীকৃতি আদায়ে অন্যতম ভুমিকা নিয়েছে।

তিনি বলেন সাংগঠনিক কাজে অরবিন্দ বাবুর অভাব দীর্ঘকাল অনুভূত হবে। সমাজকর্মী কমল চক্রবর্তী তার বক্তব্যে অরবিন্দ রায়ের সাথে দীর্ঘ যোগাযোগের কথা উল্লেখ করে বলেন যে বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর গভীরতা এতটাই ছিল যে তিনি যা বলতেন বা লিখতেন তা কারুর পক্ষেই উপেক্ষা করা সম্ভব হতনা।

বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে তাঁর বক্তব্য ও পরামর্শ তাই সবার কাছেই গ্রহনীয় ও মুল্যবান হয়ে উঠত। শেষের দিকে বিভিন্ন কারণে তাঁর সাথে যোগাযোগ ব্যাহত হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন আজীবন তার হৃদয়ে থাকবেন তিনি। সায়েন্স ট্রায়াল অর্গনাইজেশনের সভাপতি প্রদীপ বনিক এদিন তাঁর বক্তব্যে সাংগঠনিক সূত্রে অরবিন্দ রায়ের সাথে তাঁর যোগাযোগের প্রসঙ্গে প্রতিটি কাজের ব্যাপারে অরবিন্দ রায়ের গুরুত্ব ও নিষ্ঠার কথা আলোচনা করেন।

তিনি বলেন যে কোন দায়িত্ব তাকে দিলে সম্পুর্ন নিশ্চিত থাকা যেত। সংস্থার বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের নেপথ্যে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথাও এদিন স্মরণ করেন তিনি। এছাড়া এই সংস্থার সম্পাদক সায়েন্স ট্রায়াল অর্গনাইজেশনের বি বি নাথ প্রয়াতের নিরহঙ্কারী চরিত্রের কথা উল্লেখ করে বলেন যে অত্যন্ত মেধাবী ও কর্মক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হয়েও তিনি ছিলেন প্রকৃতার্থেই মাটির মানুষ।

স্বতস্ফূর্ত সম্পর্ক ও আলাপচারিতার মাধ্যমে তিনি অতি সহজেই সবাইকে আপন করে নিতে পারতেন, যা এখনকার যুগে দুর্লভ। বিডিএফ এর হৃষীকেশ দে তার স্মৃতিচারণে ব্যাঙ্ক আধিকারিক হিসেবে তার দক্ষতা ও গভীরতার কথা উল্লেখ করে কিভাবে এই বিষয়ে তিনি একজন গ্রাহককে সহায়তা করেছিলেন তার উল্লেখ করেন।

তাঁর সাথে অরবিন্দ বাবুর হৃদ্ধতা ও আন্তরিকতার কথাও এদিন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন তিনি। এছাড়া প্রকাশনা ব্যবসায়ী পিনাকি দাস এদিন প্রয়াতের প্রখর যুক্তিবাদী মনন ও বক্তব্যের স্মৃতিচারণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। প্রয়াতের স্মৃতিতে নীরবতা পালনের মাধ্যমে এদিনের সভা শেষ হয়।

অন্যন্যদের মধ্যে এদিনের স্মরণসভায় উপস্থিত ছিলেন দেবায়ন দেব, দীপক দাস, প্রমুখ। ঈশানকথার পক্ষ থেকে চিন্ময় ভট্টাচার্য এক প্রেস বার্তায় এই খবর জানিয়েছেন।

Show More

Related Articles

Back to top button