প্রতিমা বিসর্জনপর্ব তৃতীয় দিনেও অব্যাহত শ্রীভূমিতে

শ্রীভূমি, ৪ অক্টোবর : সীমান্ত শহর শ্রীভূমিতে দুর্গোৎসবের সমাপ্তি উপলক্ষে প্রতিমা বিসর্জন পর্ব তৃতীয় দিনেও অব্যাহত রয়েছে। আজ শহরের তিনটি বিগ বাজেটের পুজো কমিটির প্রতিমা নিরঞ্জন পর্ব শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়। গতকাল সকাল থেকে শুরু হওয়া নিরঞ্জন পর্ব চলে আজ ভোররাত অবধি।
গতকাল মোট ৩৩ টি প্রতিমা বিসর্জন হয়েছে বলে জানান উপ পুরপতি সুখেন্দু দাস। সারারাত ধরে ধারা বর্ষণ উপেক্ষা করেও প্রতিমা নিরঞ্জন পর্ব সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন হয়।
মধ্য শ্রীভূমি, ইয়ুথ স্কয়ার, ব্রাইটস্টার, রয়্যাল স্টার, সুভাষ মিলনী সহ বেশ কয়েকটি পুজো কমিটির প্রতিমা নিরঞ্জন পর্ব গতকাল সম্পন্ন হয়। পুরপতি রবীন্দ্রচন্দ্র দেব, জেলা বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য বৃষ্টিতে ভিজে বিসর্জন ঘাটে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থেকে প্রতিমা নিরঞ্জনে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন বলে জানান উপ পুরপতি সুখেন্দু দাস। পুরসভার কর্মীরাও রাত জেগে প্রতিমা বিসর্জন কাজে রত ছিলেন।
আজ ইয়ুথ ইউনিটি, ক্লাব হিন্দুস্তান ও ভিতর বনমালি পুজো কমিটির প্রতিমা নিরঞ্জন পর্ব সম্পন্ন হয়। গতকালের বিসর্জন পর্ব উপভোগ করতে শহরে দর্শনার্থীদের ঢল নামে। শহরে প্রতিটি রাস্তায় তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। ধারা বৃষ্টিপাত উপেক্ষা করেও জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সুসজ্জিত দোলায় করে প্রতিমা নিরঞ্জনের একটি মুহূর্ত। কাতারে কাতারে দর্শনার্থীদের ঢল নামে। বলতে গেলে বৃষ্টিস্নাত প্রতিমা নিরঞ্জন পর্বের সাক্ষী হয়ে থাকলো শ্রীভূমি।
এদিকে সুশীল সমাজ পাশ্চাত্য ডিজে সংস্কৃতির বিরুদ্ধে আওয়াজ উঠালেও বাস্তবে এর কোনও প্রভাব পড়েনি। সুশীল সমাজের আবেদন উপেক্ষা করে প্রায় প্রতিটি পুজো কমিটি তাঁদের প্রতিমা বিসর্জনের শোভাযাত্রায় ডিজেকে প্রাধান্য দেয়। কান ঝালাপালা করে দেওয়া শব্দে অসুস্থ মানুষের অসুবিধা বোঝার মতো মানসিকতা কারও মধ্যে নেই। ডিজের প্রবল শব্দে বয়স্ক লোকেদের প্রাণ ওষ্ঠাগত। এনিয়ে বিভিন্ন সচেতন মহলে ব্যাপক বিরূপ প্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে তার স্বরে মাইক বাজানো হয়। গানের অনুষ্ঠান থেকে চড়ুইভাতি সব জায়গাতেই ডিজে বাজানো রেওয়াজ হয়ে গিয়েছে। ডিজে বাজানো নিয়ে নিষেধাজ্ঞা বা নির্দিষ্ট সময়ের পর মাইক না বাজানোর যে বিধিনিষেধ আছে, তার তোয়াক্কা করা হয় না। গভীর রাত পর্যন্ত উৎসব-অনুষ্ঠানের নামে শব্দের তাণ্ডব চলে। সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে শিশু এবং বয়স্কদের সমস্যায় পড়তে হয়। পুলিশ-প্রশাসনও এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় না বললেই চলে। বুকে পেসমেকার বসানো এক প্রৌঢ় অভিযোগ করে বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ডিজের আওয়াজ সহ্য করতে হয়। আয়োজকরা তাঁদের সমস্যার কথা ভাবেন না। প্রশাসনকে ডিজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানান ভুক্তভোগীরা।