১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহের শহীদদের শ্রদ্ধাঞ্জলি করিমগঞ্জের মালেগড়ে, পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার দাবি

জনসংযোগ, করিমগঞ্জ, ১৮ ডিসেম্বর : সিপাহী বিদ্রোহের পটভূমি লাতুর ঐতিহাসিক মালেগড় টিলায় শহীদদের শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানো হয় আজ রবিবার সকালে । জেলা প্রশাসন, সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর ১৬ নং ব্যাটালিয়ন এবং বলিষ্ঠ স্বেচ্ছাসেবী সংঘটন পাটকাই ট্রেকার্স, বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন সহ বিভিন্ন বিভাগের যৌথ উদ্যেগে পালন করা হয় ১৬৫ তম শহীদ স্মরণ অনুষ্ঠান । বেলা ১০ টায় ২৬ বীর শহীদদের স্মৃতি সৌধতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করেন রাজ্য তথ্য আয়ুক্ত কনক চাঁদ শর্মা, ডা. সমুদ্র গুপ্তা কাশ্যপ, সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর ১৬ নং ব্যাটালিয়নের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড নরেন্দ্রর রুরিয়া, অতিরিক্ত জেলাশাসক রিন্টু বড়ো, সার্কেল অফিসার অন্তরা সেন । শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানো হয় পাটকাই ট্রেকার্স, বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন, প্রেস ক্লাব করিমগঞ্জ, অসম গ্রামীন বিকাশ ব্যাঙ্ক কর্মচারী সংস্থা, আসাম ইতিহাস সংস্কলন সমিতি সহ অন্যান্য সংঘটনের পক্ষ থেকে ।
সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর ১৬ নং বাহিনীর পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয় । শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠানে সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয় সর্ব ধর্ম প্রার্থনা সভার ।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিএসএফ এর ১৬ নং বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড নরেন্দ্রর রুরিয়া বলেন, ১৮৫৭ সালে ভারতবর্ষের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম হিসেবে অবিহিত সিপাহী বিদ্রোহের সময় ১৮ ডিসেম্বর তারিখে মেজর বিঙের সৈনাপত্যে বৃটিশের সিলেট লাইট ইনফেনট্রি-র দুর্ধর্ষ অভিযানের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড সাহসের সঙ্গে যুদ্ধ করে লাতুর ঐতিহাসিক মালেগড় টিলায় বেশ কয়েকজন স্বাধীনতাকামী ভারতীয় সৈনিক শহীদ হয়েছেন । তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আজকের দিনে এই শহীদ স্মরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে । সিপাহি বিদ্রোহের স্মৃতি বিজড়িত মালেগড় টিলা সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর কর্মক্ষেত্রের এলাকায় এবং বীর শহীদপুন্য ভূমিকে রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্বে থাকা পাশাপাশি অনুষ্ঠানে সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর অংশগ্রহণ সত্যিই গর্বের বিষয় বলে উল্লেখ করেন বিএসএফ অধিকারীকজন ।
অনুষ্ঠানে সিপাহি বিদ্রোহের অতিত নিয়ে বক্তব্য রাখেন রাজ্য তথ্য আয়ুক্ত ডা. সমুদ্র গুপ্তা কাশ্যপ । মালেগড় যুদ্ধ যে সিপাহী বিদ্রোহ নয়, মালেগড় যুদ্ধ ছিল দেশের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ সে কথা উল্লেখ করেন তিনি । তিনি বলেন যে, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদকে দেশ থেকে উৎখাত করতে দেশীয় সিপাহীরা প্রথম বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিল । যার জন্য আজ আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি ।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন রাজ্য তথ্য আয়ুক্ত কনক চাঁদ শর্মা, উত্তর করিমগঞ্জের বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ, ভারতীয় ইতিহাস সংকলন সমিতির আসাম রাজ্যে সমিতির সম্পাদক ড: নীলাঞ্জন দে, বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্য সম্মলনির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক ডা. সব্যসাচী রায়, পাটকাই ট্রেকার্সের অরূপ রায়, সৈয়দ মুজিব আহমেদ, সাহিদুল ইসলাম চৌধুরী প্রমখরা ।
উপস্থিত ছিলেন বিএসএফের ১৬ নং বাহিনীর এডজুটেন্ট দেবেন্দ্রর সিং, ডেপুটি কমাডেন্ট সলিল কুমার, সুতারকান্দি বিওপি কোম্পানি কমান্ডার এসি সুনিল বেনিওয়াল, তেশুয়া বিওপি কোম্পানি কমান্ডার এসি রাকেশ কুমার, অতিরিক্ত জেলাশাসক রিন্টু বড়ো, ডিএসপি সিদ্ধেশ্বর সনোয়াল, সার্কেল অফিসার অন্তরা সেন, করিমগঞ্জ জেলা নির্বাচন আধিকারিক মংভে ইংহি, বাংলাদেশের শিল্পী সাহিত্যিক তন্নী দেবী, করিমগঞ্জ পুরসভার সহ-সভাপতি সুখেন্দু দাস প্রমুখরা ।
সিপাহী বিদ্রোহের স্মৃতি বিজড়িত স্মারক স্থলকে পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলার দাবি জানানো হয় পাটকাই ট্রেকার্সের পক্ষ থেকে ।