Barak Valley

স্মার্ট মিটার বাধ্যতামূলক করার প্রতিবাদে সি পি আই (এম) এর বিক্ষোভ করিমগঞ্জে

করিমগঞ্জ : স্মার্ট মিটার বাধ্যতামূলক করা,মাত্রাতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল আদায়,সীমাহীন বিদ্যুৎ মাশুল বৃদ্ধির বিরোধিতা সহ পাঁচ দফা দাবিতে শিববাড়ি রোড এ পি ডি সি এল অফিসে বিক্ষোভ ধর্ণায় বসে সি পি আই (এম) করিমগঞ্জ লোকাল কমিটি। স্মার্ট মিটারের বিরুদ্ধে রাজ্যব্যাপী আন্দোলন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সি পি আই (এম) আসাম রাজ্য কমিটি।

সেই সিদ্ধান্ত অনুসারে আজ ৬ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ইং সি পি আই (এম) করিমগঞ্জ লোকাল কমিটির উদ্যোগে বিক্ষোভ ধর্ণা অনুষ্ঠিত হয়। লোকালের বিভিন্ন স্থান থেকে কয়েকশো শ্রমজীবী মানুষ, কৃষক এই বিক্ষোভ ধর্ণায় অংশগ্রহণ করেন। বিক্ষোভে যোগ দিয়ে সি পি আই (এম) করিমগঞ্জ জিলা সম্পাদক পরিতোষ দাশগুপ্ত বলেন বিদ্যুৎ বিভাগ মানুষের মতামতের বিরুদ্ধে গিয়ে গ্রাহকের ঘরে স্মার্ট মিটার বসাচ্ছে। ইতিমধ্যে জিলা সহ রাজ্যের অনেক অঞ্চলে স্মার্ট মিটার বসেছে। মানুষের অভিজ্ঞতা বলছে স্মার্ট মিটার বসানোর পর মাত্রাতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল আসছে। একই সঙ্গে অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে বিদ্যুৎ মাশুল। রাজ্য সরকার সাধারণ গরীব মানুষের কথা ভাবছে না।অতি ধনী ব্যবসায়ীদের মুনাফা পাইয়ে দেওয়ার জন্যই রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত। একতরফা ভাবে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে স্মার্ট মিটার। এটা উদার অর্থনীতির অঙ্গ। কারণ উদার অর্থনীতিতে বৃহৎ ব্যবসায়ীদের মুনাফার গ্যারান্টি দিতে সরকার যেকোনো পদক্ষেপ নিতে পারে তা যতই সাধারণ মানুষের স্বার্থ বিরোধী হোক। আসাম রাজ্য সরকার এই কাজ করেছে।

তিনি বলেন রাজ্যে প্রয়োজনের তুলনায় বিদ্যুৎ উৎপাদন নগণ্য। উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কোন পরিকল্পনা রাজ্য সরকারের নেই।জিলায় বিদ্যুৎ পরিবহনের লাইনগুলো নড়বড়ে। তাই ঘনঘন লোড শেডিং, বিদ্যুৎ বিভ্রট নিত্যদিনের ঘটনা। ঠিকাদারের যোগান দেওয়া অপরিপক্ক কর্মী দ্বারা বিদ্যুৎ বিভাগ চলছে। তবু বাড়ানো হচ্ছে বিদ্যুতের দাম।

তিনি বলেন বিদ্যুৎ মুনাফার জায়গা নয়, গ্রাম,শহরের গরীব মানুষ বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন। এদিকে লক্ষ রেখেই গরীব মানুষ যাতে বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারে তার জন্য পরিকল্পনা নিয়েছিলো আগের সরকারগুলি। বর্তমান রাজ্য সরকার বিদ্যুৎ বিভাগকে কতিপয় বৃহৎ ব্যবসায়ীর মৃগয়া ক্ষেত্র বানাতে চাইছে। তার জন্য এতো আয়োজন। তিনি বিদ্যুৎ বিভাগের জনবিরোধী পদক্ষেপগুলির বিরুদ্ধে দলমত নির্বিশেষে আপামর জনসাধারণকে রাস্তায় নেমে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

সি পি আই (এম) জিলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য কালিপদ নাথ বলেন রাজ্য জুরে মানুষ স্মার্ট মিটারের প্রতিবাদে আন্দোলনে নামছেন। রাজনৈতিক দল, সংগঠন, সামাজিক সংস্থাগুলো রাস্তায় প্রতিবাদে নামছেন, রাজ্য সরকার,বিদ্যুৎ বিভাগ নির্বিকার।

তিনি বলেন মানুষের ঐক্যের জোর অসীম। রাজ্য সরকারকে এই প্রতিরোধের কাছে মাথা নোয়াতে হবে। সি পি আই (এম) রাজ্যব্যাপী স্মার্টমিটারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছে। জিলায় ইতিমধ্যে বদরপুরে বিক্ষোভ হয়েছে। আগামীতে পাথারকান্দি এবং রামকৃষ্ণনগরে অনুরূপ বিক্ষোভের কর্মসূচী নিয়েছে দল। তিনি দলমত নির্বিশেষে জিলার শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষকে এই আন্দোলনের পাশে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। বিক্ষোভ ধর্ণা থেকে পাঁচ দফা দাবি সম্বলিত এক স্মারকপত্র এ পি ডি সি এল করিমগঞ্জ অফিসের বিভাগীয় অফিসারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পাঁচ দফা দাবির মধ্যে ছিলো স্মার্ট মিটার বাধ্যতামূলক করা বন্ধ করা, অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল প্রদান বন্ধ করা, ক্রমাগত বিদ্যুৎ মাশুল বৃদ্ধি বন্ধ করা,লোড শেডিং বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করা, পরিবহন লাইনে সংস্কার ইত্যাদি।

ধর্ণা শেষে এক প্রতিবাদী মিছিল শিববাড়ি রোড এ পি ডি সি এল অফিস থেকে শুরু হয়ে শহর পরিক্রমা করে কালিবাড়ি রোডে শেষ হয়। এদিনের কর্মসূচীতে অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন সি পি আই (এম) করিমগঞ্জ লোকাল সম্পাদক অরুন দত্ত, সঞ্জেন্দু নাথ, কালিকুমার দে, রাজেন্দ্র দেব প্রমুখ।

Show More

Related Articles

Back to top button