করিমগঞ্জে আন্তর্জাতিক গার্লস চাইল্ড দিবস পালন

করিমগঞ্জ : করিমগঞ্জের মহিলা ও শিশু কল্যাণ বিভাগের অধীনে সংকল্প কার্যসূচির ডিস্ট্রিক্ট হাব ফর এমপাওয়ারমেন্ট অফ ওম্যান মিশন শক্তির উদ্যোগে মঙ্গলবার বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও এর অধীনে আন্তর্জাতিক গার্লস চাইল্ড ডে উদযাপন করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় করিমগঞ্জের জেলা গ্রন্থাগার ভবনে জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয় থেকে আগত ছাত্রী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী সহায়িকা, অঙ্গনওয়াডি সুপারভাইজার, সিডিপিওদের উপস্থিতিতে এদিন এই দিবস পালন করা হয়। এই দিবসের থিম-সি মেকইস দা ওয়ার্ল্ড ব্রাইট বাট স্টিল স্ট্রাগলস টু সি দ্যা লাইট নিয়ে অনুষ্ঠিত এদিনের অনুষ্ঠানে জেলা সমাজ কল্যাণ আধিকারিক আহিদুল ইসলাম, বিদ্যালয় সমূহের পরিদর্শক নিলমজ্যোতি দাস, জেলা আইন সেবা কর্তৃপক্ষের সদস্য সচিব নিকুঞ্জ বড়ো, জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগের নির্বাহী বাস্তুকার অশোক বিজয় দাস, করিমগঞ্জ কলেজের সহকারি অধ্যাপক দুইজন ড. পার্থ সারথি দাস ও ড. বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্যী, চাইল্ড লাইন কোর্ডিনেটর ইয়াসমিন সুলতানা, ডিএইচইডব্লুউ এর ডিস্ট্রিক্ট প্রোগ্রাম কোর্ডিনেটর রূপকথা চক্রবর্তী প্রমূখ প্রদীপ প্রজ্জলন করে এবং একজন ছোট মেয়ের নৃত্য পরিবেশের মধ্য দিয়ে এই দিবস পালনের সূচনা করা হয়।
এতে অংশগ্রহণ করে ডিস্ট্রিক্ট লিগ্যাল সার্ভিসেস অথরিটির সদস্য সচিব নিকুঞ্জ বড়ো ২৪ ঘন্টা কার্যকরী চাইল্ড লাইন নম্বর ১০৯৮, ওম্যান হেল্পলাইন নম্বর ১৮১ নিয়ে আলোচনা করেন। পাশাপাশি তিনি ডিস্ট্রিক্ট লিগ্যাল সার্ভিসেস অথরিটির শিশু, মহিলা, বৃদ্ধ ব্যক্তি এবং অন্যান্য নাগরিকদের আইনি সহায়তা ও অন্য সহায়তা প্রদান করতে চালু থাকা ডি এল এস এ হেল্পলাইন নম্বর ১৫০০ এর বিষয়ে বিবরণ তুলে ধরেন। তিনি সবাইকে এ বিষয়ে সচেতন হতে এবং মানসিকতার পরিবর্তন করতে আহ্বান জানান। পাশাপাশি তিনি সরকারি স্কিম গুলি সম্পর্কে জানতে এবং এর সুযোগ গ্রহণ করতে তথা প্রয়োজনে আওয়াজ তুলতেও আবেদন রাখেন। এতে ড. বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্যী নারীর উন্নয়নে পড়াশুনার গুরুত্ব, সমাজের প্রতিটি স্তরে নৈতিক ভাবনার উন্নতি সাধন, মনোবল জোরদার করতে আহ্বান জানান। অপর বক্তা ড. পার্থসারথী দাস স্বাধীনতার এত বছর পরও ছেলে মেয়ে লিঙ্গ বৈষম্য নিয়ে ভাবতে হয় যা বড় দুঃখের বলে বর্ণনা করেন। তিনি সমাজে জনগণকে মানসিকতার পরিবর্তন করতে আহ্বান জানান। তিনি রাষ্ট্র সংঘ থেকে ২০১১ সালের ১১ অক্টোবর প্রতি বছর আন্তর্জাতিক গার্লস চাইল্ড ডে উদযাপন করা হচ্ছে এবং বর্তমানে প্রতিটি ক্ষেত্রে মেয়েরা ছেলেদের সাথে সমভাবে এগিয়ে রয়েছে। তাই তিনি পরিবারের মাতা পিতা সহ সমাজের প্রতিজন ব্যক্তিকে মেয়েদের প্রতি সমভাব পোষণ করতে আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ে সমূহের পরিদর্শক নিলমজ্যোতি দাস সহ অন্যান্য বক্তারা এদিন মেয়ে ও নারীদের সমাজের উন্নয়নে সম অংশীদারিত্ব রয়েছে বলে বর্ণনা করেন তাই তাদের প্রতি কোন ধরনের বৈষম্য না রাখতে আহ্বান জানান। এদিকে এই দিবস পালনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে তিনজন দিব্যংগ, যোগায় বিশেষ দক্ষতা জন্য বিকি তলাপাত্র, শিক্ষায় বিশেষ কৃতিত্বের জন্য মিতালী রাণী দেব এবং নৃত্যে বিশেষ দক্ষতার জন্য কাঞ্চনা রায়কে সংবর্ধনা জানানো হয়। পাশাপাশি, পড়াশুনা থেকে বাদ পড়া কিন্তু আবার শিক্ষার মূল স্রোতে ফিরে এসে ভাল প্রদর্শন করার জন্য সাগরিকা দাস, প্রিয়া পথি এবং তুসি দাসকে সংবর্ধনা জানানো হয়। এদিকে এই দিবস উপলক্ষে ইতিমধ্যে অনুষ্ঠিত খেলাধুলার প্রতিযোগিতায় দৌড়ে প্রথম সাবিনা বেগম, দ্বিতীয় রিমা বেগম এবং তৃতীয় স্থানাধিকারি আসমা বেগমকে পুরস্কৃত করা হয়। এছাড়া ব্লাইন্ড ফোল্ডিং প্রতিযোগিতায় প্রথম পায়েল রবিদাস, দ্বিতীয় পার্বতী দাস, তৃতীয় ফুলমনি তাঁতি, চতুর্থ নাজুমা বেগম ও পঞ্চম স্থানাধিকারি সান্নাজ বেগমকে পুরস্কৃত করা হয়। এদিনের অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মিশন শক্তির প্রধানমন্ত্রী মাতৃ বন্দনা যোজনার ডিপিসি ঈশিতা দাস।