করিমগঞ্জের লঙ্গাই নদীপথে অবৈধভাবে মিজোরামের বাঁশ পাচার অব্যাহত

পাথারকান্দি : করিমগঞ্জের লঙ্গাই নদীপথে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ফের অবৈধভাবে স্থানীয় বনাঞ্চল সহ পড়শী রাজ্য মিজোরামের বাঁশ পাচারের খবর পাওয়া গেছে। এতে একাংশ বন কর্মীর পরোক্ষ মদত রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন এলাকার পরিবেশপ্রেমীরা।
জানা গেছে, শুকনো মরশুমে পাথারকান্দির উজানে রাঙামাটি, মেদলিছড়া ও সংলগ্ন এলাকার সংরক্ষিত বনাঞ্চল উজাড় করে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে সড়কপথে লক্ষ লক্ষ টাকার বনজ বাঁশ পাথারকান্দি, নিলামবাজার, করিমগঞ্জ সহ বরাক উপত্যকার স্থানে স্থানে পাচার করা হচ্ছিল।
এ নিয়ে বিগত দিনে জেলা বন কর্তাদের কড়া অবস্থানে বেশ কয়েকটি বাঁশ বোঝাই গাড়িও ধরা পড়ে। ফলে কিছুদিন বাঁশ পাচার বন্ধ ছিল।
কিন্তু বর্তমান মরশুমে নদীপথে জল বেশি থাকায় পাচারকারীরা এবার লঙ্গাই নদীকে তাদের সেফ করিডোর হিসাবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন পরিবেশকর্মীরা। মাস কয়েক আগে দোহালিয়া বন বিভাগের কর্মীরা নদীপথে পাচারের পথে বেশ কিছু বাঁশ বাজেয়াপ্ত করায় কিছুদিন এই অবৈধ কাজ বন্ধ ছিল। সম্প্রতি ফের নদীপথে দেদার বাঁশ পাচারের অভিযোগ উঠেছে।
এ সব পাচার বাণিজ্যে লাগাম টানতে একাংশ বন কর্মী তত্পর হলেও অন্য কয়েকজন বাঁকাপথে বাঁশ মাফিয়াদের সঙ্গে গোপনে আঁতাত করার বিস্তর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগকারীরা বলেছেন, প্রতি সপ্তাহে রাঙামাটি সহ উজান এলাকা ও মিজোরাম থেকে কমপক্ষে চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ হাজার বাঁশ লঙ্গাই নদীপথে নেমে আসে। এতে বিশেষ একটি সিন্ডিকেট বাঁশ প্রতি এক টাকা করে আদায় করে বলেও অভিযোগ করেছেন তাঁরা।
অভিযোগকারীদের দাবি, সপ্তাহে চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকার তোলা আদায় করা হলেও এ সব টাকার কানাকড়ি সরকারি কোষাগারে জমা পড়ে না। এতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এলাকার পরিবেশপ্রেমী ও সচেতন মহল।
জানা গেছে, রবিবার রাতে রাঙামাটি এলাকা থেকে লঙ্গাই নদীপথে প্রায় দশ হাজার বাঁশ পাচারের রোখার চেষ্টা করেছিলেন দোহালিয়া বন বিভাগের সলগই ফরেস্ট বিটের কয়েকজন কর্মী। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তাঁরা ব্যর্থ হয়েছেন। খবরটি অন্যান্য বিটকর্তা ও রেঞ্জকর্তাদের অবগত করা হলেও তাঁরাও এ বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ নেননি বলে অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত পাচারকৃত বাঁশগুলো যথা সময়ে যথাস্থানে পৌঁছে যায়।
বিষয়টি জেলা বন বিভাগের দুই এসিএফ যথাক্রমে সুখদেব সাহা ও দেবজ্যোতি নাথের নজরে আনেন স্থানীয়রা। তাঁরা শীঘ্রই এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিচ্ছেন বলে জানান।