করিমগঞ্জের ডেঙ্গারবন্দে জাতীয় সড়কে লরি-অটো সংঘর্ষের নিহতের সংখ্যা বেড়ে তিন, আহত শিশু সহ চার

পাথারকান্দি : করিমগঞ্জ জেলার অন্তর্গত বাজারিছড়া থানাধীন সলগই ডেঙ্গারবন্দ এলাকায় ত্রিপুরাগামী ৮ নম্বর জাতীয় সড়কে পণ্যবাহী লরির সঙ্গে যাত্রীবাহী অটো রিকশার সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে তিন। এর আগে দুজনের মৃত্যু হয়েছিল। একই দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন এক শিশু ও মহিলা সহ চারজন। একজনের শারীরিক অবস্থা এখনও সংকটজনক বলে জানা গেছে। তিনি শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে রয়েছেন।
দুর্ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে সোমবার মধ্যরাতে। দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু বরণ করেছিলেন ডেঙ্গারবন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা জনৈক রাধা দাস (৪৮)। এছাড়া গুরুতর আহতদের শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত রাস্তায় প্রাণ সংবরণ করেন অটো রিকশা চালক অপু শুক্লবৈদ্য (২৮)। আজ মঙ্গলবার বিকাল প্রায় চারটা নাগাদ শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে মৃত্যুমর কোলে ঢলে পড়েন সঞ্জু দাস নামের এক প্রৌঢ়। রাজেন নামের একজন এখনও শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিত্সাধীন। এছাড়া অন্য আহতদের চিকিত্সা চলছে বাজারিছড়ায় মাকুন্দা হাসপাতালে।
জানা গেছে, ডেঙ্গারবন্দ পঞ্চায়েতের গোপালপুর পঁচিশঘরির বাসিন্দা সঞ্জু দাস (নিহত) ও ঝুনু দাসের মেয়ে মাম্পি দাসের বিয়ে হয়েছিল রাঙামাটির রাজেন দাসের (শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে) সঙ্গে। মাম্পিদের একটি চার বছরের পুত্রসন্তান রয়েছে। শিশুটি প্রায়ই অসুস্থ থাকে। ফলে গত কয়েকদিন ধরে মাম্পি তাঁর পিত্রালয়ে অবস্থান করছিলেন সন্তানকে নিয়ে। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্বামী রাজেন দাসও।
সোমবার রাতে শিশু রাজদীপ দাসের হঠাত্ শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে তড়িঘড়ি এএস ১০ এসি ৭৪০১ নম্বরের অটোয় করে বাজারিছড়ায় মাকুন্দা হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন সঞ্জু। সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী, মেয়ে জামাতা ও গ্রামের প্রতিবেশী রাধা দাস (নিহত) নামের আরেক ব্যক্তি। চালকের আসনে ছিলেন গ্রামের যুবক অপু (ঘটনাস্থলেই মৃত্যু)। চালক সহ মোট সাত যাত্রী নিয়ে অটোটি ডেঙ্গারবন্দ ঈদগাহ টিলা এলাকায় পৌঁছলে ঘটে দুর্ঘটনাটি।
কিন্তু আচমকা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কে দণ্ডায়মান ত্রিপুরাগামী এনএল ০১ এল ৫৬১৪ নম্বরের দশ চাকার সিমেন্ট বোঝাই লরির পেছনে ধাক্কা মারে অটো রিকশা। ফলে অটো রিকশাটি দুিমড়ে-মুচড়ে সড়কের পাশে বিকট শব্দ করে গড়িয়ে পড়েি। দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় পড়শি রাধা দাসের।
এদিকে জাতীয় সড়কে টহলদারী বাজারিছড়া পুলিশের এক দল ঘটনাস্থলে গিয়ে হাজির হয়। তাঁরা রক্তাক্ত আহতদের উদ্ধার করে মাকুন্দা হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু দুর্ঘটনাস্থলেই প্রতিবেশী রাধা দাস মৃত্যুবরণ করেছেন বলে ঘোষণা করে সঞ্জু দাস, রাজেন দাস ও অটো চালক অপু শুক্লবৈদ্যকে উন্নত চিকিত্সার জন্য শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালে রেফার করেন ডাক্তাররা। কিন্তু শিলচর যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় অপু শুক্লবৈদ্যের। অন্যরা বর্তমানে মাকুন্দায় চিকিত্সাধীন।
এদিকে দুর্ঘটনার পর সিমেন্ট বোঝাই লরিটি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে পাকড়াও করে চুড়াইবাড়ি পুলিশ। সঙ্গে আটক করা হয় লরি চালককেও। দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি দুটি বর্তমানে বাজারিছড়া পুলিশের হেফাজতে।