মণিপুরে পুলিশের উর্দি পরে অস্ত্রধারী দুষ্কৃতীদের আস্ফালন, চলছে হত্যা-ছিনতাই
ইম্ফল : আগেই সেনার তরফে দাবি করা হয় যে সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে গিয়ে মণিপুরে পুলিশ এবং নিরাপত্তারক্ষীদের ওপর হামলা চালাচ্ছে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। এবার, মণিপুরের প্রশাসনের আধিকারিকদের অভিযোগ, পুলিশের পোশাক পরে এসে সাধারণ মানুষকে হত্যা করছে দুষ্কৃতীরা। সেখানের আধিকারিকদের দাবি, হিংসা এবং সংঘর্ষ-বিধ্বস্ত মণিপুরে পুলিশ এবং নিরাপত্তাবাহিনীর ইউনিফর্ম পরিহিত সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা সেই রাজ্যের সরকার এবং বাসিন্দাদের জন্য একটা ভয়ের কারণ হয়ে উঠেছে।
কারণ, সেখানে পুলিশের ছদ্মবেশে এবং অত্যাধুনিক অস্ত্র নিয়ে রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে ওই দুষ্কৃতীরা। পুলিশের কাছে থেকে অনেকগুলি আগ্নেয়াস্ত্র লুট করা হয়েছে। সেই অস্ত্র হাতে নিয়ে ঘোরার কারণে তারা যে আসল পুলিশ নয় তা বুঝতে পারছেন না সাধারণ বাসিন্দারা। পুলিশের ছদ্মবেশে এসে সেখানে ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে তারা।
মণিপুরের শীর্ষ প্রশাসনিক আধিকারিকদের দাবি, এই দুষ্কৃতীরা তোলাবাজি এবং হত্যা সহ রাজ্যে নাশকতামূলক কার্যকলাপে যুক্ত রয়েছে। মণিপুরের অতিরিক্ত স্বরাষ্ট্র সচিব মহারাবাম প্রদীপ বলেন, ‘রাজ্যের সরকার এবং এখানের পুলিশ রাজ্যে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য সব ধরণের চেষ্টা করছে। কিন্তু এই সময়েই সমস্যা সৃষ্টি করছে দুষ্কৃতীরা। পুলিশের পোশাক পরে, ছদ্মবেশে এসে তারা শুধু তোলাবাজি, নানা রকম অপরাধ করছে না। মানুষকে হত্যাও করছে তারা। এর ফলে পুলিশ এবং প্রশাসনের যে চেষ্টা তা ব্যাহত হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘এই সমস্যা এবং পরিস্থিতি দৃঢ়ভাবে দমন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ মণিপুর পুলিশ। এই ভয়ঙ্কর অবস্থার প্রতিরোধ করতে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে পুলিশ।’ এই সঙ্গে তিনি জানান, পুলিশের পোশাক পরে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র সহ কয়েকজনকে গ্রেফতার হয়েছে। গত ১৬ তারিখ ‘ক্যামফ্লেজ’ পোশাক পরে ঘুরে বেড়ানোর সময়ে, অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র সহ ৫ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ এবং নিরাপত্তা কর্মীরা।
মণিপুর পুলিশ জানিয়েছে, এই রকম কাজের জন্য ওই দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে কড়া আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এদিকে, সেখানের উপত্যকা এলাকার জেলাগুলি থেকে তোলাবাজি করা এবং সাধারণ মানুষকে হুমকি দেওয়ার প্রচুর অভিযোগ আসছে বলেও জানা গিয়েছে। তারপরেই ওই এলাকায় নজরদারি আরও বৃদ্ধি করা হয়েছে।
অন্যদিকে, যে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়ে সেখানে বনধের ডাক দিয়েছে একাধিক সামাজিক সংগঠন।