Business

লাখ দুয়েক টাকা ধার করে শুরু করেছিলেন বন্ধন ব্যাঙ্ক, এই বাঙালিকে চেনেন?

লকাতা: বন্ধন ব্যাঙ্ক, ঘরে ঘরে পরিচিত এখন এই ব্যাঙ্কের নাম। দেশের ৩৫টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে রয়েছে বন্ধন ব্যাঙ্কের শাখা। গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৩ কোটি। ভারতীয় ব্যাঙ্কিং সেক্টরের ইতিহাসে বন্ধন ব্যাঙ্কের মতো উত্থান খুব কমই দেখা গিয়েছে। কিন্তু এই বন্ধন ব্যাঙ্ক কীভাবে তৈরি হল?

বন্ধন ব্যাঙ্কের প্রতিষ্ঠাতা তথা সিইও চন্দ্রশেখর ঘোষ। ১৯৬০ সালে ত্রিপুরার আগরতলায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। খুব অল্প বয়স থেকেই আর্থিক কষ্ট, দুরাভাবের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে তাঁকে। চন্দ্রশেখরের বাবার একটি মিষ্টির দোকান ছিল, তার হালও খুব একটা ভাল ছিল না। কিন্তু এই অর্থকষ্টও দমাতে পারেনি চন্দ্রশেখরকে। দুধও বিক্রি করেছেন তিনি। সঙ্গে চালিয়ে গিয়েছেন পড়াশোনা।

স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে চন্দ্রশেখর বাংলাদেশে চলে যান উচ্চশিক্ষার জন্য। ১৯৭৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্ট্যাটিস্টিক্সে স্নাতক হন। কলেজের পড়াশোনা চালানোর জন্য তিনি একটি আশ্রমে থাকতেন, সেখানেই শিশুদের পড়াতেনও তিনি। তবে জীবন বদলে যায় ১৯৮৫ সালে। চন্দ্রশেখর চাকরি পান ঢাকার একটি আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংস্থায়। সেখানে কাজ করার সময় অনুপ্রাণিত হন চন্দ্রশেখর।

১৯৭৭ সালে কলকাতায় ফিরে আসেন চন্দ্রশেখর। গ্রামোন্নয়ন সোস্যাইটিতে কাজ শুরু করেন। ২০০১ সালে তিনি তৈরি করেন একটি মাইক্রো-ফিন্যান্স কোম্পানি। নাম দেন বন্ধন। এই সংস্থা তৈরি করা হয়েছিল মহিলাদের ঋণ দেওয়ার জন্য। আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে ২ লক্ষ টাকা ধার করে, মাত্র ১২ জন কর্মীদের নিয়ে যাত্রা শুরু করে বন্ধন। ২০০২ সালের মধ্যেই কোম্পানি ১১০০ মহিলাকে ১৫ লক্ষ টাকা ঋণ দিতে সক্ষম হয়।

২০০৯ সালে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অধীনে নন-ব্যাঙ্কিং ফিন্যান্স কোম্পানি হিসাবে রেজিস্টার হয় বন্ধন। দেখতে দেখতেই তা ৮০ লক্ষ মহিলাকে ঋণ দিতে সক্ষম হয়। ২০১৩ সালে যখন আরবিআই ব্যাঙ্ক তৈরির আবেদন গ্রহণ শুরু করে, সঙ্গে সঙ্গে সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আবেদন করেন চন্দ্রশেখর ঘোষ। ২০১৫ সালে ব্যাঙ্কিং লাইসেন্স পায় বন্ধন, নতুন পরিচয় তৈরি হয় বন্ধন ব্যাঙ্ক।

বর্তমানে দেশের ৩৫টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বন্ধন ব্যাঙ্কের ৬২৬২টি শাখা রয়েছে। গ্রাহকের সংখ্যা ৩.২৬ কোটি। বন্ধন ব্যাঙ্কের মার্কেট ভ্যালু বর্তমানে ২৮ হাজার ৯৯৭ কোটি টাকা।

Show More

Related Articles

Back to top button