শিলচরের মেহেরপুর ৫-৮ মে রবীন্দ্রজয়ন্তী
শিলচর : শিলচরের শিবালিক পার্ক ডেভেলপমেন্ট কমিটির উদ্যোগে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আগামী ৫ থেকে ৮ মে পর্যন্ত চারদিন ব্যাপী উদযাপন করা হবে রবীন্দ্রজয়ন্তী।
শিবালিক পার্ক ডেভেলপমেন্ট কমিটির ব্যবস্থাপনায় প্রতি বছরের মতো এ বছরও চারদিনব্যাপী বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে রবীন্দ্রজয়ন্তী পালনের জন্য চলছে ব্যাপক প্রস্ততি।
বরাকের বিশিষ্ট নাট্যকার তথা প্রস্তাবিত রবীন্দ্রজয়ন্তী অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক আহ্বায়ক অঞ্জন স্বামী বলেন, গত কয়েক বছর থেকে মেহেরপুর শিবালিক পার্ক ডেভেলপমেন্ট কমিটি আয়োজিত রবীন্দ্রজয়ন্তীর অনুষ্ঠানমালা সাংস্কৃতিক মহলে সাড়া জাগাতে সক্ষম হয়েছে। বৈদ্যুতিন তথা সামাজিক মাধ্যমে নানা সংস্কৃতির ঢেউয়ে যখন রবীন্দ্রচর্চা কিছুটা হলেও পিছু হাঁটছে, তখন এ জাতীয় অনুষ্ঠান এক ভিন্নতর উদ্দেশ্যে ধাবিত হওয়ার আশা জাগায়, এক উচ্চতর লক্ষ্য পূরণে উৎসাহ জাগায়।
এ বছরও কমিটি এবং শিবালিক পার্কের সংস্কৃতিপ্রেমী নাগরিকরা আগামী ৫ মে থেকে ৮ মে নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রবীন্দ্রজয়ন্তী উদযাপন করবেন। অনুষ্ঠান সূচিতে রয়েছে গত ২৭ এপ্রিল থেকে রবীন্দ্র সংগীতের কর্মশালা চলছে, এতে শিক্ষক হিসেবে বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী রয়েছেন।
আগামী ৫ এপ্রিল প্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে রবীন্দ্রজয়ন্তী উদযাপনের সূচনা হবে। সকাল ১০:৩০ মিনিটে বসে আঁকো প্রতিযোগিতা, বিকাল চারটায় রবীন্দ্র সংগীত প্রতিযোগিতা, সন্ধ্যা ৭:১৫ মিনিটে আমন্ত্রিত বিশিষ্ট শিল্পীদের রবীন্দ্র সংগীতের আসর। আমন্ত্রিত রবীন্দ্র সংগীত শিল্পীদের মধ্যে রয়েছেন বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী, পঙ্কজ নাথ, সুদীপ্তা ভট্টাচার্য।
৬ এপ্রিল বিকাল চারটা থেকে আবৃত্তি প্রতিযোগিতা, বিকাল ৫:৩০ মিনিটে রবীন্দ্র নিত্য প্রতিযোগিতা, রাত আটটায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ৭ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬:৩০ মিনিটে বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, রাত ৮-টায় রবীন্দ্রকাব্য নৃত্যনাটিকা (সামান্য ক্ষতি)। ৮ মে শিবালিক পার্ক মহিলা সংগঠনের ধারা সকাল ছয়টায় প্রভাত ফেরি, সকাল ৭:০০টায় রবীন্দ্র কথা গান, নাচ ও কবিতা পাঠ, সন্ধ্যা ছয়টায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ৭:০০টায় নাটক (দালিয়া), রাত আটটায় পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান।
প্রতিযোগিতা হব চারটি বিভাগে, বসে আঁকো, রবীন্দ্র সংগীত, রবীন্দ্র কবিতা আবৃত্তি এবং রবীন্দ্র নৃত্য প্রতিযোগিতা। শিবালিক পার্ক ডেভেলপমেন্ট কমিটির ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত রবীন্দ্রজয়ন্তী অনুষ্ঠানমালা শিবালিক পার্ক দুর্গা মণ্ডপ প্রাঙ্গণে আয়োজিত হবে এবং এই উপত্যকার যে কোনও অঞ্চল থেকে এসে নাট্যশিল্পী, সংগীতশিল্পী, নৃত্যকার সহ অঙ্কন শিল্পীরা অংশগ্রহণ করতে পারবেন। এতে কোনও ধরনের প্রবেশমূল্য নেই। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে হলে ৯১০১৭১৭৪৬৫, ৯৪৩৫৭২৯৪০ এবং ৯১০১৯৭৩১৫০, এই নম্বরগুলোতে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানান তিনি।
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সুদীপ্ত দেবরায় বলেন, সাহিত্যের প্রবাদপুরুষ হলেও রবীন্দ্রনাথ ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। একাধারে সংগীতজ্ঞ, কথা সাহিত্যিক, নাট্যকার, চিত্রশিল্পী, দার্শনিক, প্রাবন্ধিক, শিক্ষাবিদ ও সমাজ সংস্কারক। নিজের সময়ের চেয়েও এগিয়ে ছিল তাঁর চিন্তাভাবনা। তাই তো তাঁর অমর সৃষ্টিগুলির আজও মানব সমাজে একই জায়গা রয়েছে। বিশ্বের নানা প্রতিষ্ঠানে পড়ানো হয় রবীন্দ্রনাথের দর্শন। তাঁর চিন্তাভাবনা আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।
সহ-সভাপতি শিশিরাংশু দাস মজুমদার বলেন, রবীন্দ্রনাথকে যেভাবে এই অঞ্চলের চর্চা হত, ঠিক সেইভাবে আর এখন আর চর্চা হচ্ছে না, তাই তাঁরা রবীন্দ্রনাথের অবদানের কথা বাংলাপ্রেমী মানুষদের কাছে তুলে ধরার প্রয়াস এভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন এবং আগামীতে আরো বেশি করে চালিয়ে যাবেন। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সদস্য দেবানন পাল, দেবব্রত চক্রবর্তী, সুমিতা রায়চৌধুরী, সন্তোষী দাস, সুদীপ্তা পাল, সুতপা পাল প্রমুখ।