Barak Valley

করিমগঞ্জে খুন করে মৃত ১৪ বছরের কিশোরীকে ধর্ষণ, গ্রেফতার তিন

করিমগঞ্জ : করিমগঞ্জে জনৈক নাবালিকাকে প্রথমে খুন এবং পরে দলবদ্ধভাবে মৃতদেহে ধর্ষণজনিত ঘটনায় সাফল্য পেয়েছে সদর পুলিশ। ময়না তদন্তের রিপোর্ট এবং মোবাইলে নম্বরের লিংক খুঁজে পুলিশ পৈশাচিক কাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে।

আজ বৃহস্পতিবার করিমগঞ্জের পুলিশ সুপার পার্থপ্রতিম দাস সাংবাদিক সম্মেলন করে ঘটনা সম্পর্কিত তথ্যাবলি তুলে ধরেছেন।

তিনি জানান, ঘটনায় এ পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে তিনজনকে। পুলিশের তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনাটি সংগঠিত হয়েছিল গত ১০ সেপ্টেম্বর। ঘটনার পর পুলিশ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত শুরু করে। পরবর্তীতে ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে আসলে মেয়েটিকে যে খুন করে তার মৃতদেহে ধর্ষণ করা হয়েছে, সে সম্পর্কে নিশ্চিত হয় পুলিশ।

তিনি জানান, এর পর মৃতার বাড়ির একটি মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে অভিযান শুরু হয় পুলিশের। অভিযানে আটক করা হয় রাহুল দাস, শুভ্ৰ মালাকার এবং বিপ্লব মালাকার নামের তিন নরপিশাচকে।

করিমগঞ্জের দুই এএসপিকে পাশে বসিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, করিমগঞ্জ রেল কলোনির রাহুল দাস নামের যুবক তার আরও দুই বন্ধু বিপ্লব মালাকার ও শুভ্র মালাকারকে নিয়ে কিশোরীর বাড়িতে প্রবেশ করে বলপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা ক‌রে। কিন্তু বিফল হ‌য়ে নাবা‌লিকা‌টি‌কে খুন ক‌রে তারা। এর পর মৃত নাবালিকাকে এরা ধর্ষণ ক‌রে।

আজ কাকভোরে প্রথমে রাহুলকে তার বাড়ি থেকে আটক করা হয়। এর পর বাকি দুজনকে, জানান পুলিশ সুপার। তিনি বলেন, তদন্ত আরও বাকি রয়েছে। ধৃত তিনজনকে রিমান্ডে নেওয়া হবে। আরও ধরপাকড়ের সম্ভাবনা রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ১০ সেপ্টেম্বর করিমগঞ্জ জেলা সদরের উপকণ্ঠ সরিষা এলাকার জয়রাম কলোনিতে নিজেদের বসতঘর থেকে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী পৌলমী দাস (পরিবর্তিত নাম) নামের এক নাবালিকার বিবস্ত্র মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিল। ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংশ্লিষ্ট এলাকা সহ গোটা করিমগঞ্জ শহরে সৃষ্টি হয় ব্যাপক চাঞ্চল্যের। চাপা ক্ষোভ বিরাজ করে শহর জুড়ে। নাবালিকার মৃত্যুর প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করে খুনের সঙ্গে জড়িত দুষ্কৃতীদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলে জেলা বিজেপি, জেলা কংগ্রেস থেকে শুরু করে বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করে এ ব্যাপারে স্মারকপত্রও তুলে দেন অনেকে।

ওইদিন ছিল রবিবার। সকালে জয়রাম কলোনিতে ঘর থেকে মৃতদেহ উদ্ধার হয় পৌলমী দাসের। তখন জানা গিয়েছিল, করিমগঞ্জ জেলার পাথারকান্দি বিধানসভা কেন্দ্রাধীন লোয়াইরপোয়া থেকে বেশ কয়েকদিন আগে সরিষায় এসে অস্থায়ীভাবে বসবাস করছিলেন ব্রজমোহন দাস (পরিবর্তিত নাম)। ঘটনার দুদিন আগে চার মেয়েকে ঘরে রেখে মনসা পূজা উপলক্ষ্যে গিয়েছিলেন লোয়াইরপোয়ায় গ্রামের বাড়িতে। কিন্তু ওইদিন সকালে ঘর থেকে গোপনাঙ্গে রক্তাক্ত অবস্থায় মৃতদেহ উদ্ধার হয় ১৪ বছরের স্কুলছাত্রী পৌলমী দাসের।

সকালে ঘটনা চাউর হলে প্রতিবেশীরা খবর দেন সদর থানায়। ছুটে যান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিতরাজ চৌধুরী, সদর থানার ওসি ভবেশ দিহিঙ্গিয়ারা। ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ালে ছুটে যান পুলিশ সুপার পার্থপ্রতিম দাসও।

ম্যাজিস্ট্রেট রংভে ইংভির উপস্থিতিতে পৌলমীর মৃতদেহ উদ্ধার করে সঙ্গে সঙ্গে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয় শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। আজ বৃহস্পতিবার এই কাণ্ডে সাফল্য পেয়েছে পুলিশ।

Show More

Related Articles

Back to top button