Barak Valley

করিমগঞ্জে শিক্ষক দিবস উদযাপন : ২৮ জন কৃতি শিক্ষককে সংবর্ধনা

জনসংযোগ, করিমগঞ্জ : মহান দার্শনিক ভারতের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি ড. সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণের জন্মদিন ৫সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার করিমগঞ্জেও ৬৩তম শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করা হয়েছে। করিমগঞ্জের জেলা শিক্ষক দিবস উদযাপন সমিতির উদ্যোগে শুক্রবার সকাল ১১ টায় করিমগঞ্জ জেলার মূল অনুষ্ঠান জেলা গ্রন্থাগার ভবনে উদযাপন করা হয়।

করিমগঞ্জের জেলা আয়ুক্ত ও জেলা শিক্ষক দিবস উদযাপন সমিতির সভাপতি মৃদুল যাদবের পৌরোহিত্যে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে মুখ্য অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ মিশন রঞ্জন দাস, সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উত্তর করিমগঞ্জের বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ। নির্ধারিত বক্তার আসনে সমাজসেবী, লেখক, সাংবাদিক ও প্রেসক্লাবের প্রাক্তন সভাপতি সতু রায় অংশগ্রহণ করেন। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আগত শিক্ষক শিক্ষিকা, ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানে ড. সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, প্রদীপ প্রজ্জ্বলন এবং অতিথিদের উত্তরীয় দিয়ে বরণ করা হয়।

তারপর এম এম এম সি উচ্চতর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করে।

অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ প্রদান করেন করিমগঞ্জের বিদ্যালয় সমূহের পরিদর্শক এবং জেলা শিক্ষক দিবস উদযাপন সমিতির সম্পাদক নীলমজ্যোতি দাস।

অনুষ্ঠানে নির্ধারিত বক্তার ভাষণে সতু রায় ড. সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণের জীবন আদর্শ নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা করেন। তিনি শিক্ষার প্রসারে এবং শিক্ষক ও ছাত্র ছাত্রীদের কল্যাণে নতুন শিক্ষানীতি, শিক্ষা কমিশনগুলির সুপারিশ, বর্তমান সরকারের গুরুকুল শিক্ষাপদ্ধতির চিন্তাভাবনা, আরোহন, মেন্টর-মেন্টি পদ্ধতি ইত্যাদি নিয়ে সারগর্ভ আলোচনা করেন।

অনুষ্ঠানে মুখ্য অতিথির ভাষণে মিশন রঞ্জন দাস ড. সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণের জীবন আদর্শ নিয়ে আলোচনা করেন। পাশাপাশি তিনি নীতি শিক্ষার প্রসার ঘটাতে গুরুত্ব আরোপ করেন এবং উদাহরণের মাধ্যমে শিক্ষকদের তাদের ছাত্রের কাছে আদর্শ শিক্ষক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে আহ্বান জানান।

এতে বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ তার ভাষণে গুরু শিষ্যের আধ্যাত্মিক সম্পর্ক, ঋণাত্মক চিন্তাভাবনা থেকে বিকাশ সম্ভব নয় বলে মত প্রকাশ করে শিক্ষক সমাজকে ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণনের চিন্তাধারা থেকে উন্নয়নমুখী ভাব ধারায় চলতে আহ্বান জানান। তিনি বর্তমান সময়ে পরিবর্তনশীল শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে নতুন শিক্ষার প্রসারে শিক্ষকদের নিজেকে আপডেট রাখতে পরামর্শ দেন।

সভাপতির ভাষণে জেলা আয়ুক্ত মৃদুল যাদব শিক্ষাদানের পাশাপাশি নির্বাচন, বন্যা সহ বিভিন্ন সরকারি কাজে শিক্ষকরা সহায়তা করার জন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। প্রসঙ্গত তিনি উল্লেখ করেন যে বিভিন্ন সরকারি বিদ্যালয়ে তার ভ্রমণকালে তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে নিজেকে শিক্ষক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার ভাবনা পরিলক্ষিত করেছেন। তাই তিনি শিক্ষক সমাজকে জাতির মেরুদন্ড হিসেবে আখ্যা দিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের ওই কোমল ভাবনাগুলিকে আরও গুরুত্ব দিয়ে তাদের প্রতি যত্নশীল হতে আহ্বান জানান। তিনি বর্তমান সময়ে সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষার মান উন্নয়নে যেভাবে গুরুত্ব আরোপ করা হচ্ছে এবং বিভিন্ন সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে তার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে শিক্ষকদেরকে গুনোৎসব সহ ছাত্র-ছাত্রীদের কল্যাণে শিক্ষাদানে অধিক সচেষ্ট হতে আহ্বান জানান।

এ দিন ৬৩ তম শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে জেলার ২৮ জন কৃতি শিক্ষক শিক্ষিকার হাতে বিশিষ্টজনেরা ফুলের তোড়া, শংসাপত্র তুলে দিয়ে সংবর্ধনা জ্ঞাপন করেন। সংবর্ধনা প্রাপ্ত এই শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন অসীম চক্রবর্তী, স্বপ্না রাণী রায়, আব্দুল হামিদ, খিরিজ হায়াত খান, অনুজ কুমার দাস, আবুল কালাম, মহেন্দ্র চন্দ্র নাথ, আলতাফ হোসেন, সুনীল সিংহ, নবগোপাল দে, গিয়াস উদ্দিন আহমেদ, হাম্বির প্রতিম দত্ত, সুমিতা দাস চৌধুরী, বিমান চন্দ্র কর, নিকুঞ্জ পাল, ছামিমুর রেজা চৌধুরী, ছালেহুর রহমান, সিতাংশু পাল, এখলাছুর রহমান খান, রামানুজ দাস, মর্তুজা আহমেদ, জয়ন্ত কুমার শ্যাম চৌধুরী, আশীষ দাস, মানিক চন্দ্র পাল, গোপাল চন্দ্র দাস, আশীষ দে, ভূপেন্দ্র দাস ও অরুণ চৌধুরী। অনুষ্ঠানের সমাপ্তিতে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বিদ্যালয় সমূহের উপ পরিদর্শক খয়রুল ইসলাম হাজারী ও সমাপ্তি সংগীত পরিবেশন করা হয় এম এম এম সি উচ্চতর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের পক্ষ থেকে।

Show More

Related Articles

Back to top button