রবীন্দ্রসদনে ভাষা গৌরব সপ্তাহ পালন

করিমগঞ্জ : রবীন্দ্রসদন কলেজে ৬-৮ নভেম্বর ৩ দিন ধরে ভাষা গৌরব সপ্তাহ উদযাপন করা হয়৷ কলেজের IQAC ও বাংলা বিভাগের যৌথ সহযোগিতায় ভাষা গৌরব সপ্তাহ আয়োজিত হয়৷
৬ নভেম্বর আয়োজিত হয় বক্তৃতা সভা৷ এতে আমন্ত্রিত বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আবি’র বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. বরুণজ্যোতি চৌধুরী ও করিমগঞ্জ কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য৷ প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও অতিথি বরণের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়৷ পরে প্রারম্ভিক ভাষণ দেন বাংলা বিভাগের প্রধান ড. তনুশ্রী ঘোষ৷
প্রধান বক্তা বরুণজ্যোতি চৌধুরী বলেন, বর্তমান বিশ্বে শুধু বাংলা ভাষাই অস্তিত্বের সংকটের শিকার নয়, বিশ্বের সব ভাষই কমবেশি অস্তিত্বের সংকটের শিকার৷ এই প্রেক্ষাপটে ধ্রূপদি ভাষা হিসাবে বাংলা ভাষার স্বীকৃতি পাওয়া অত্যন্ত সম্মানের৷ তাই বলে আমাদের আত্মশ্লাঘায় ভুগলে চলবে না৷ অন্য ভাষা ও ভাষিক সম্প্রদায়কে সম্মান জানাতে হবে৷ তবেই দেশের ভাষিক বহুত্ববাদ রক্ষিত হবে৷
এছাড়া তিনি নতুন শিক্ষানীতিতে মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের বিষয়টিকে সরকারের যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেন৷ তিনি বলেন, দেশের অগ্রগতি তখনই সম্ভব হবে, যখন সেই জাতির নাগরিকরা মাতৃভাষায় শিক্ষাগ্রহণ করবে ও মাতৃভাষায় মনের ভাব ব্যক্ত করবে৷ তিনি আরও বলেন, ইংরেজি ভাষা আমরা শিখতেই পারি৷ কিন্তু ইংরেজি শেখাটা যখন ফ্যাশনে পরিণত হয়, তখন তা বিপজ্জনক হয়ে উঠে৷ অপর বক্তা বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য তাঁর বক্তব্যে বাংলা ভাষা সংকটের নানা দিক দৃষ্টান্তসহ আলোচনা করেন৷
আলোচনা সভার সভাপতি হিসাবে কলেজের অধ্যক্ষ ড. অশোক কুমার দাস বলেন, এতদিন আমরা অনেকেই বাংলা বলতে সংকোচবোধ করতাম৷ আমি মনে করি বাংলা ধ্রুপদী ভাষা হিসাবে স্বীকৃতি পাওয়ায় এবার আর সেই সংকোচ করার জায়গা রইল না৷ তাই তিনি ছাত্রীদের নিঃসংকোচে সর্বত্র বাংলা ভাষায় কথা বলার পরামর্শ দেন৷ ২য় দিন বাংলা ভাষার ওপর এর কর্মশালা আয়োজিত হয়৷
এতে আমন্ত্রিত বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নবীনচন্দ্র কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. বিষ্ণুচন্দ্র দে৷ শব্দের বানান কেন এবং কীভাবে পরিবর্তিত হচ্ছে তা দৃষ্টান্ত সহকারে ছাত্রীদের সম্মুখে তিনি তুলে ধরেন৷ যে নিয়মগুলি অনুসরণ করলে বানান বিভ্রাট থেকে আমরা মুক্তি পেতে পারি তাও উল্লেখ করেন তিনি৷
অনুষ্ঠানের অন্তিম দিনে সঙ্গীত, নৃত্য, আবৃত্তি, কবিতা গল্প, প্রবন্ধ ও ক্যুইজ প্রতিযোগিতা আয়োজিত হয়৷ এতে উৎসাহের সঙ্গে কলেজের ছাত্রীরা অংশগ্রহণ করে৷ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপাধ্যক্ষা ড. সারদামণি দাস, IQAC-র আহ্বায়ক অধ্যাপক এল মার, সাংস্কৃতিক কমিটির অধ্যাপক ড. রাজদীপ চন্দ, বাণিজ্য বিভাগের প্রধান অধ্যাপক কৃষ্ণেন্দু মালাকার৷ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ড. পারমিতা আচার্য৷