মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র ফাঁস, নতুন করে ফের পরীক্ষা গ্রহণের দাবি বিডিএফ-এর

শিলচর : অসম মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদ (সেবা) পরিচালিত এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষার সমস্ত বিষয়ের প্রশ্নপত্রই ফাঁস হয়েছে বলে সন্দেহ করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সম্পূর্ণ পরীক্ষা বাতিল করে আবার নতুনভাবে পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে বরাক ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (বিডিএফ)।
রবিবার এক প্রেস বার্তায় বিডিএফ-এর মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জয়দীপ ভট্টাচার্য বলেন, বিজ্ঞান ও এমআইএল পরীক্ষা ইতিমধ্যে বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু যে সব পরীক্ষা হয়ে গেছে সে সবের প্রশ্নপত্রও ফাঁস হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে খবর আসছে। তাই গোটা প্রক্রিয়াই সন্দেহের আবর্তে। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে ধেমাজি থেকে জনৈক পরীক্ষার্থী অঙ্ক পরীক্ষার প্রশ্ন অগ্রিম পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
এছাড়া আসাম পুলিশের কনস্টেবল শচীন দলৈ জোর দিয়ে বলছেন, সমাজবিজ্ঞান সহ অন্যান্য বিষয়ের প্রশ্নপত্র পেয়েছেন বা তাঁকে অগ্রিম পাঠানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তাই পরীক্ষার্থীদের প্রতি সুবিচার করতে হলে গোটা পরীক্ষা আবার নতুনভাবে নেওয়া জরুরি।
জয়দীপ বলেন, এ সবের জন্য শিক্ষামন্ত্রী ও সেবা কর্মকর্তারা সম্পূর্ণ দায়ী। তিনি বলেন, সমগ্র অসম এবং বিশেষত বরাক উপত্যকার যে সব ছাত্রছাত্রী দিনরাত পরিশ্রম করে এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন, সরকারের এই দায়িত্বহীনতা তাঁদের প্রেরণা, মনোবল ও উদ্যমকে ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে। বলেন, এ ধরনের অপদার্থতা ক্ষমার অযোগ্য। এতে জাতীয় স্তরে রাজ্যের বদনাম হচ্ছে। তাই সমগ্র ঘটনার দায়ভার নিয়ে অবিলম্বে শিক্ষামন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে, দাবি তুলেছে বিডিএফ। একইভাবে সেবা-র বর্তমান চেয়ারম্যান রমেশ জৈনকেও অবিলম্বে এই পদ থেকে অপসারণের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
বিডিএফ মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক প্রেসবার্তায় আরও বলেন, এবারের পরীক্ষা সেবা কর্তৃক যেভাবে পরিচালিত হয়েছে তাতে সেবা পরিচালিত পূর্ববর্তী তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগ পরীক্ষা নিয়েও সন্দেহ দেখা দিয়েছে। ওই সব পরীক্ষার প্রশ্নপত্রও যে অগ্রিম ফাঁস হয়নি সে নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারবে না। তাই সেবা পরিচালিত পূর্ববর্তী নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে অবিলম্বে সিবিআই তদন্ত করানো উচিত বলে মনে করেন তিনি।
বিডিএফ-র আরও এক আহ্বায়ক খাইদেম কান্ত সিং বলেন, মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে সমগ্র ঘটনার জন্য কতিপয় শিক্ষককে দায়ী করছেন বা কোনও চক্রান্তের কথা বলছেন তা আসলে নিজেদের দোষ আড়াল করার স্বার্থে। যদি শিক্ষকদেরই সবকিছুর জন্য জবাবদিহি করতে হয় তবে সেবা তথা শিক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্ব কী? তা-হলে এ সবের জন্য জনগণের টাকা অপচয় করার দরকারই বা কী? এ সব উঠিয়ে দিলেই হয়।
তিনি বলেন, এ সব ছেদো যুক্তি দিয়ে জনগণকে ভোলানো যাবে না। আগামীতে কীভাবে ত্রুটিমুক্ত পরীক্ষা পরিচালনা করা হবে সে নিয়ে অবিলম্বে শ্বেতপত্র প্রকাশ করুক সরকার। ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যত নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অধিকার কাউকে দেওয়া হবে না বলেও হুমকি দিয়েছেন তিনি।