শিলচরের ইটখোলায় বিবেকানন্দ প্রেক্ষাগৃহ সার্কল অফিসে রূপান্তরিত, জেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে সরব বিডিএফ

শিলচর, ২০ মে : কাছাড় জেলা প্রশাসনের আবেদনের ভিত্তিতে শিলচরের ইটখলায় একটি প্রাচীন সংস্কৃত টোলের এক বিঘা জমি বিবেকানন্দ প্রেক্ষাগৃহ বানানোর উদ্দেশ্যে দান করেছিলেন টোলের প্রধানশিক্ষক। এর পর প্রশাসনের উদ্যোগে এই প্রেক্ষাগৃহের কাজ সম্পন্ন করা হয়। কিন্তু জনগণকে অজ্ঞাত রেখে হঠাত্ করে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে এই দালানকে সার্কল অফিসে রূপান্তরিত করা করেছে জেলা প্রশাসন।
সমগ্র ঘটনাক্রমের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বরাক ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (বিডিএফ) মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায়।
প্রদীপ দত্তরায় বলেন, সংস্কৃত টোলের কাজকর্ম বর্তমানে সীমিত থাকলেও এই টোলের একটি ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। কারণ আদি ভাষা হিসেবে সংস্কৃত এখনও আমাদের ঐতিহ্যের প্রতীক। এই টোলের শিক্ষকের সাথে কথা বলে তিনি জানতে পেরেছেন, যখন এই জমিতে বিবেকানন্দ প্রেক্ষাগৃহ নির্মাণের প্রস্তাব দেওয়া হয়, তখন কেউ আপত্তি করেননি।
কারণ বিবেকানন্দকে তিনি সংস্কৃত শিক্ষা তথা হিন্দু ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক হিসেবে শ্রদ্ধা করেন। তাই তাঁর তরফে ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ তিনি অনতিবিলম্বে জেলা প্রশাসনের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু কী করে এখানে সার্কল অফিসের কাজ শুরু করা হয়েছে, সে ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রধানশিক্ষক তাঁর কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি। তাই এটা পরিষ্কার, তাঁকে এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে পুরো অন্ধকারে রেখে এই সিদ্ধান্ত বদল করা হয়েছে, যা পুরোপুরি অনৈতিক।
প্রদীপবাবু আরও বলেন, এখানে প্রেক্ষাগৃহ তৈরি হবে জেনে তিনিও এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। কারণ তাতে এলাকার সাংস্কৃতিক সংগঠকদের সুবিধা হত ও সংস্কৃতি চর্চায় জোয়ার আসত। কিন্তু হঠাত্ করে জেলা প্রশাসনের এমন হঠকারী সিদ্ধান্তে তিনিও বিস্মিত হয়েছেন। তিনি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে এই পূর্ব নির্ধারিত ও নির্মিত দালানগৃহকে ‘বিবেকানন্দ প্রেক্ষাগৃহ’ হিসেবে জনগণের স্বার্থে উন্মোচিত করতে প্রশাসনের কাছে দাবি জানান প্রদীপ দত্তরায়।
তাঁর বক্তব্য, কারণ সার্কল অফিসে রুপান্তর করতে গিয়ে এতে প্রকারান্তরে স্বামী বিবেকানন্দকে অপমান করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বিজেপি বা আরএসএস, বজরং দল, বিশ্বহিন্দু পরিষদের মতো সংগঠন যারা সবসময় হিন্দুত্বের ধুয়ো তুলেন, তাঁরা এভাবে বিবেকানন্দের অপমান মেনে নিচ্ছেন কী করে! তিনি তাঁদের সবাইকে এ ব্যাপারে প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন। যদি জেলা প্রশাসন আইনি জটিলতা সৃষ্টি করে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করার পরিকল্পনা করে তবে এর বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামবে বরাক ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট, স্পষ্ট জানিয়েছেন প্রদীপ দত্তরায় ও বিডিএফ মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক হৃষীকেশ দে।