National

মণিপুর থেকে সরানো হোক আসাম রাইফেলস, রাজনাথকে মৈতেইরা

ইম্ফল : মণিপুর হিংসার ঘটনায় সম্প্রতি অসম রাইফেলসের বিরুদ্ধেই এফআইআর করেছিল সেই রাজ্যের পুলিশ। ইম্ফলের মেইতেই জনগোষ্ঠীর মধ্যে সেনাকে নিয়ে তৈরি হয়েছে বিরূপ মনোভাব। এই পরিস্থিতিতে মেইতেইদের সংগঠনের সদস্যরা গতকাল দিল্লিতে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁদের দাবি, অসম রাইফেলসকে সরানো হোক রাজ্য থেকে।

বদলে অন্য কোনও নিরাপত্তা বাহিনী পাঠনো হোক সেখানে। জানা গিয়েছে, দিল্লি মেইতেই সমন্বয় কমিটির কয়েকজন সদস্য দেখা করেছিলেন রাজনাথের সঙ্গে। এদিকে এর আগে ইম্ফলের বুদ্ধিজীবীদের এক সংগঠনও এই দাবি জানিয়েই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেন তিনবার।

এর আগে অসম রাইফেলসের বিরুদ্ধে মণিপুর পুলিশের এফআইআর নিয়ে দেশ জুড়ে চর্চা শুরু হয়েছিল। অভিযোগ ছিল, অসম রাইফেলসের নবম ব্যাটেলিয়নের জওয়ানরা মণিপুর পুলিশকে দায়িত্ব পালনে বাধা দিয়েছে এবং কুকি জঙ্গিদের পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছে। পরে এই নিয়ে এই নিয়ে মুখ খোলে ভারতীয় সেনা। সেনাবাহিনীর তরফে এক বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, অসম রাইফেলসের সঙ্গে দাঁড়িয়ে থেকে মণিপুরে শান্তি ফেরানোর কাজ চালিয়ে যাবে সেনা। অসম রাইফেলস ও সেনাবাহিনী যৌথ উদ্যোগে মণিপুরের অশান্তি প্রতিরোধে পদক্ষেপ করে চলেছে। মণিপুরে সহিংসতা বাড়িয়ে তুলতে পারে এমন কোনও প্রচেষ্টাকে প্রতিরোধ করতে পদক্ষেপ করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ থাকবে তারা। পাশাপাশি সেনার বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, অসম রাইফেলস মানুষকে বাঁচানোর জন্য কাজ করছে মণিপুরে। সেনার অভিযোগ, অসম রাইফেলসকে বদনাম করার অপপ্রচেষ্টা চলছে।

উল্লেখ্য, গত ৩ মে থেকে জাতিগত হিংসার সাক্ষী মণিপুর। মাঝে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত ছিল। তবে পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি অবস্থা। এখনও পর্যন্ত কয়েক হাজার জনকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চূড়াচাঁদপুর, মোরে, কাকচিং এবং কাংপোকপি জেলা থেকে অধিকাংশ মানুষকে সরানো হয়েছে। এরই মধ্যে হিংসায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। অভিযোগ উঠেছে কুকি ‘জঙ্গিরা’ অটোমেটিক রাইফেল নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই আবহে কুকি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে সেই রাজ্যে।

প্রসঙ্গত, ইম্ফল উপত্যকায় সংখ্যাগরিষ্ঠ হল মৈতৈ জনজাতি। তবে তারা সম্প্রতি দাবি তুলেছে যে তাদের তফসিলি উপজাতির তকমা দিতে হবে। তাদের এই দাবির বিরোধ জানিয়েছে স্থানীয় কুকি-জো আদিবাসীরা। এই আবহে গত এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে মণিপুরের অল ট্রাইবাল স্টুডেন্ট ইউনিয়ন একটি মিছিলের আয়োজন করেছিল। সেই মিছিল ঘিরেই হিংসা ছড়িয়ে পড়ে চূড়াচাঁদপুর জেলায়। এদিকে তফশিলি উপজাতির ইস্যুর পাশাপাশি সংরক্ষিত জমি এবং সার্ভে নিয়েও উত্তাপ ছড়িয়েছে। এই আবহে গত এপ্রিল মাসে এই চূড়াচাঁদপুর জেলাতেই মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের সভাস্থলে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল ইন্ডিজেনাস ট্রাইবাল লিডারস ফোরামের সদস্যরা। এদিকে এই জেলা থেকে আদিবাসী বনাম মৈতৈদের এই সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য জেলাতেও। আর এখনও পর্যন্ত সেই হিংসা প্রাণ হারিয়েছেন ১৭৫ জনেরও বেশি মানুষ।

Show More

Related Articles

Back to top button